বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে পরিবর্তন আসবে এমন একটা সুর কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার সত্যতা টের পাওয়া গেল যখন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও সংবাদ সম্মেলনে এসে পরিবর্তনের কথা বললেন। এই কোচ স্পষ্টই জানিয়েছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে আসছে একাধিক পরিবর্তন। তবে কারা দলে আসছেন আর কারা বাদ পড়ছেন সেটাই এখন সবচেয়ে বড় আলোচনা।
সবচেয়ে জোড়ালো যে নামটা শোনা যাচ্ছে তিনি হচ্ছেন সৌম্য সরকার। এমনকি বিশ্বকাপের মূল স্কোয়াড ঘোষনার সময় থেকেই তাঁর নামটা শোনা যাচ্ছিল। তবে ওপেনার হিসেবে শেষ পর্যন্ত জায়গা হয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর। বিশ্বকাপ দলে না থাকলেও তিনি যে বিবেচনায় ছিলেন তা পরিষ্কার। নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ম্যাচ খেলার সুযোগও পেয়ে গেলেন সৌম্য। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৩ রানের ইনিংস খেলার পর আলোচনাটায় আরেকটু জোর পেল যেন। এছাড়া তাঁর বোলিংটাও ব্যবহার করতে চাইছে বাংলাদেশ দল। ফলে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে যে সৌম্য সরকার খেলছেন সেটা মোটামুটি নিশ্চিতই।
আর সৌম্য সরকার দলে যোগ হলে কপাল পুড়তে পারে সাব্বির রহমানের। অনেকদিন পর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন এই হার্ড হিটার। এবার অবশ্য বাংলাদেশ দল তাঁকে ব্যবহার করেছে ওপেনার হিসেবে। চার ম্যাচে সুযোগ পেলেও কোনটিতেই কাজে লাগাতে পারেননি এই ব্যাটার। চার ম্যাচে তাঁর ইনিংসগুলো যথাক্রমে ৫,০,১২ এবং ১৪।
ফলে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে হয়তো তাঁকে আর বয়ে বেড়াতে চাইবেনা বাংলাদেশ দল। তাঁর জায়গায় দলে যুক্ত হতে চলেছেন সৌম্য সরকার। ফলে ওপেনিং পজিশনে বাংলাদেশের যে সংকট সেটা কাটিয়ে ওঠার শেষ চেষ্টা করা হবে সৌম্যকে দিয়েই। এছাড়া কন্ডিশনের কারণেও এগিয়ে থাকছেন এই ব্যাটার।
ব্যাটিং অর্ডারে বাংলাদেশের যে সংকট তাঁর নিচে চাপা পড়ে যায় বোলিং দুর্বলতাও। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলা হলেও বাংলাদেশের পেস আক্রমণ খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই। মুস্তাফিজুর রহমান অফ ফর্মের কারণে একাদশ থেকেই বাদ পড়েছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও শেষ দিকে প্রচুর রান দিচ্ছেন।
এছাড়া হাসান মাহমুদ কিংবা এবাদত হোসেনও এই ফরম্যাটে এখনও নিজেদের সেভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। একমাত্র তাসকিন আহমেদই বাংলাদেশের পেস আক্রমণকে ভরসা যোগাচ্ছেন। ওদিকে এই ত্রিদেশীয় সিরিজে পেস বোলার হিসেবে শরিফুল ইসলামও ছিলেন।
এশিয়া কাপ খেলতে পারেননি। এরপর বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও ছিলেন না তিনি। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গিয়েছিলেন। সেখানে নিজেকে প্রমাণ করার পর ত্রিদেশীয় সিরিজের দলেও জায়গা হয়। এবার বিশ্বকাপ দলেও তাঁকে যুক্ত করার গুঞ্জন উঠেছে।
তিনি দলে যুক্ত হলে জায়গা হারানোর সম্ভাবনা আছে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ইনজুরি থেকে ফেরার পর আর নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি এই পেসার। বল হাতেও বেশ খরুচে হয়ে উঠেছেন। এছাড়া তাঁর ব্যাটিংটাও ব্যবহার করতে পারছেনা বাংলাদেশ দল।
ফলে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে তিনিও হয়তো বিশ্বকাপ খেলার সুযোগটা পাচ্ছেন না। মোদ্দা-কথা বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে আসতে চলেছে দু’টি পরিবর্তন। ওপেনিং পজিশনে সাব্বিরের জায়গায় আসছেন সৌম্য সরকার। আর পেসার হিসেবে সাইফউদ্দিনের জায়গায় হয়তো কপাল খুলছে শরিফুলের।