বিগ স্টেজ, বিগ ম্যাচ – রিয়াল মাদ্রিদের নাম্বার সেভেন পারফর্ম করবেনই। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিষ্ঠা করে যাওয়া ধ্রুব সত্য পূর্ণতা পেয়েছে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের হাত ধরে। না, ভুল বলেছি; হাত নয়, বরং পায়ে পূর্ণতা পেয়েছে। একজোড়া পা দিয়েই তিনি ছিঁড়েখুঁড়ে খান ইউরোপীয় জায়ান্টদের, যার সর্বশেষ শিকার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
২০২২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জয়সূচক গোল করেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান, পরের ফাইনালে তাঁর গোলেই নিশ্চিত হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের পনেরোতম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। পুরো আসর জুড়ে একের পর এক অতিমানবীয় পারফরম্যান্স উপহার দেয়ার পর উপসংহারেও বড্ড সুন্দর তিনি – তাই তো এবারের ব্যালন ডি’অরের সবচেয়ে দাবিদার ভাবা হচ্ছে তাঁকেই।
ফাইনালের প্রথমার্ধে বরুশিয়া অবশ্য আধিপত্য দেখিয়েছিল, গোলের সুবর্ণ সুযোগও পেয়েছিল একাধিকবার। অন্যদিকে, লস ব্ল্যাঙ্কোসরা তখন কিছুটা ব্যাকফুটে; রদ্রিগো বলই পাচ্ছিলেন না আর ভিনিসিয়াস বারবার আটকে যাচ্ছিলেন ম্যাট হামেলসদের কাছে।
কিন্তু যার রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিরোপার নেশা তাঁকে আটকে রাখবে এমন কিছুই নেই পৃথিবীতে। আটকে রাখা যায়নি এই লেফট উইঙ্গারকেও, বামপাশ দিয়ে রায়ারসনকে পরাস্ত করে কর্নার এনে দিয়েছিলেন দলকে। সেখান থেকে এসেছিল প্রথম গোল, আর দ্বিতীয়বার তো নিজেই জালে জড়িয়েছেন বল। সেই সাথে জার্মান প্রতিনিধিদের স্তব্ধ করে দিয়েছেন।
এর আগে সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে প্রথম লেগে জোড়া করেছিলেন এই তারকা, পরের লেগেও অবদান রেখেছিলেন জোসেলুর গোলে। কোয়ার্টার ফাইনালেও তাঁর ঝুলিতে যোগ হয়েছিল জোড়া অ্যাসিস্ট।
সবমিলিয়ে বয়স ২৪ হওয়ার আগেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে ১১টি করে গোল ও অ্যাসিস্টের মালিক বনে গিয়েছেন সেলেসাও ফরোয়ার্ড। এত কম বয়সে ২২টি গোলে অবদান রাখতে পেরেছেন কেবল লিওনেল মেসি। তবে মেসিকে আরেকটা জায়গায় ছাড়িয়ে গিয়েছেন তিনি, সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে দুইটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে গোল রয়েছে তাঁর।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর রাজপুত্র থেকে রাজা হওয়ার পথেই আছেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, ক্লাবকে দু’হাত ভরে সাফল্য এনে দিচ্ছেন। এখন পালা নিজ দেশ ব্রাজিলকে কিছু দেয়ার, আসন্ন কোপা আমেরিকাতে এটাই নিশ্চয় করতে চাইবেন তিনি। আর সেই চাওয়া পূর্ন হলে নিঃসন্দেহে ব্যালন ডি’অরের গায়ে লেখা হবে তাঁর নাম।