যেভাবে ব্যাঙ্গালুরুর নেতৃত্ব ছাড়েন বিরাট

'না পাওয়া' অধ্যায়ই একটা সময় পরে এসে বিষিয়ে তুলেছিল তাঁকে। ভারতের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন। আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ক্রমাগত ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে এখানেও নেতৃত্ব ছাড়লেন। অধিনায়ক হিসেবে এমন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বিরাট কোহলি নাকি একটা সময় নিজের প্রতি বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছিলেন! 

বিরাট কোহলি। নামটার পাশে সাফল্যের চাদরে মোড়ানো এক ক্যারিয়ার। তারপরও কোথায় গিয়ে যেন একটু অতৃপ্ততা আছে, আক্ষেপ আছে। কারণ ভারতের অধিনায়ক হয়ে যে একটিও শিরোপা জেতাতে পারেননি তিনি। একই ভাবে পাননি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শিরোপাও।

এই ‘না পাওয়া’ অধ্যায়ই একটা সময় পরে এসে বিষিয়ে তুলেছিল তাঁকে। ভারতের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন। আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ক্রমাগত ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে এখানেও নেতৃত্ব ছাড়লেন। অধিনায়ক হিসেবে এমন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বিরাট কোহলি নাকি একটা সময় নিজের প্রতি বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছিলেন!

সম্প্রতি নতুন সংযোজন নারী আইপিএলে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু নারী দলের এক অনুষ্ঠানে এমন কথাই শুনিয়েছেন ভারতের এ প্রাক্তন অধিনায়ক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমার অধিনায়কত্বের শেষ দিকে বলতে গেলে নিজের প্রতি বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছিলাম। নিজের মাঝে একটা শূন্যতা কাজ করতো। তবে ঐ সময় নিজেকে বুঝিয়েছি, আমি অনেক করেছি। আমার সময় শেষ।’

তবে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পরও বিরাট কোহলি ঠিক আগের অবস্থান থেকে ফিরে আসতে পারেননি। পুরনো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া তো দূরে থাক, এক ধরনের হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই স্মৃতি টেনে এনে তিনি বলেন, ‘আইপিএলে প্রত্যেক মৌসুমের শুরু থেকেই আমরা অনেক রোমাঞ্চিত থাকতাম। কিন্তু যেবার থেকে আমি আর অধিনায়ক নেই, সেবার যেন নিজের মধ্যে অতো উত্তেজনা কাজ করছিল না। ঐ সময়টাতে আমার মাঝে যে কী চলছিল তা বলে বুঝাতে পারব না। তবে সে সময় দল আমাকে শক্তি জুগিয়েছিল। তরুণ খেলোয়াড়রা আমাকে উৎসাহ আর সাহস দিয়েছিল।’

এমন দলগত বন্ধন যে একটা দলের জন্য সফলতা হওয়ার ক্ষেত্রে কতটা প্রয়োজন তার গুরুত্ব টেনে কোহলি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘ওদের সমর্থনে আমি আস্তে আস্তে দম ফিরে পাচ্ছিলাম। আর ঐবার থেকে আমরা টানা দুইবার প্লে-অফে পৌছাই। যে কোনো দলেই কোনো একজন সদস্য হতাশার মাঝে থাকতে পারে। তখন বাকি সদস্যদের এগিয়ে আসা উচিৎ। কারণ ক্রিকেটের সাফল্যটা আসে দলগতভাবেই।’

দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাট হাতে রান খরায় ছিলেন বিরাট কোহলি। নিয়মিত রান করতে পারছিলেন না। সেঞ্চুরিও আসছিল না। অথচ একটা সময়ে মুড়ি মুড়কির মতো সেঞ্চুরি করেছেন। এখন অবশ্য আস্তে আস্তে বিরাট নিজের উত্তরণ ঘটাচ্ছেন। আর এর নেপথ্যেও ছিল তাঁর জুনিয়র সতীর্থরা।

তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক ম্যাচ খেলেছি। একটা সময় নিজেকে ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। ভেবেছিলাম, বোধহয় আর হবে না। একটা অনিশ্চয়তা জেঁকে বসেছিল। মাঠে নামলেই মনে হতো, আমাকে তো রান করতে হবে। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে। কিন্তু এমন সময়ে এই জুনিয়ররাই আমাকে এসে বলল, আপনি বলটা হিট করেন শুধু। আপনি কেন বাইরের কথা ভাবছেন? আমিও ভাবলাম, তারাই তো ঠিক। এরপর আর বাইরের কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করিনি। এমন কি আমি কেমন করছি তা নিয়েও ভাবিনি।’

বিরাট কোহলি এরপরেই ফিরেছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেঞ্চুরি করে ফিরলেন। মাস তিনেক বাদে ওয়ানডেতেও পেলেন সেঞ্চুরি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক সিরিজেই করলেন দুটি সেঞ্চুরি। আর সর্বশেষ আহমেদাবাদ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেললেন ১৮৬ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...