‘ইয়ে সাল কাপ নামদে’ – এবারের কাপ আমাদের। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু এভাবেই প্রতিটা আসরে শিরোপার স্বপ্ন দেখে, শেষমেশ স্বপ্ন ভঙ্গের তীব্র যন্ত্রণা পেতে হয় তাঁদের। আর এই যন্ত্রণাতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান বিশেষ একজন, তিনি বিরাট কোহলি। কি না করেছেন তিনি একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য, অথচ দিন শেষে হেরে যাওয়া এক সেনাপতি হয়েই রইলেন।
ব্যতিক্রম হয়নি এবারের আসরেও, নৌকা দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি না দিলেও এই তারকা যা করেছেন সেটা অবিশ্বাস্যের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ম্যাচের পর ম্যাচ নিরলস গতিতে রান করে গিয়েছেন তিনি; যে দিন পারেননি সে দিন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো দল। অথচ অযৌক্তিকভাবেই তাঁর স্ট্রাইক রেট, অ্যাপ্রোচ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত ধারাবাহিক ছিলেন এই ব্যাটার, সবমিলিয়ে ১৫ ইনিংস খেলে করেছেন ৭৪১ রান! স্বাভাবিকভাবেই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় এক নম্বরে আসন পেতে বসেছেন তিনি, দ্বিতীয় স্থানে থাকা রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান ১৫০ এর বেশি!
ফিল্ডিংয়েও কম যান না এই ডানহাতি, ক্ষিপ্র গতি আর ঈর্ষণীয় রিফ্লেক্সের সুবাদে চলতি আইপিএলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এলিমেনেটর ম্যাচেও রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে দেখা গিয়েছে সেটির প্রতিফলন, প্রায় অসম্ভব একটা জায়গা থেকে ধ্রুব জুরেলকে রান আউট করেছেন!
এত কিছুর পরও কোহলির মিশন ব্যর্থ হয়েছে, বিস্ময়ের ব্যাপার সেই ব্যর্থতার দায়ভারও নিতে হবে তাঁকে। কেন রাজস্থানের বিপক্ষে বড় রান করতে পারেননি তিনি সেটা নিয়ে হয়তো নিন্দে করবে সমালোচকরা। আরেক পক্ষ হয়তো আরও এক কাঠি বাড়িয়ে বলবেন, তাঁর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এত দিনে ট্রফি জিতত ব্যাঙ্গালুরু।
অবশ্য নিখাদ ক্রিকেটপ্রেমীরা ঠিকই অনুভব করবে কিং কোহলির প্রচেষ্টা, কল্পলোকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দিতে চাইবে তাঁকে। আর তার সাথে অনুপ্রেরণা দিবে পরের মৌসুমে আবারও তীব্র উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। কেননা সবকিছুর ওপরে সত্য – ‘ইয়ে সাল কাপ নামদে’!