ছায়া হয়ে তবু পাশে রইব

পৃথিবীতে যত সম্পর্ক আছে এর মধ্যে গুরু-শিষ্যের সম্পর্কটা একটু ভিন্ন। এর মধ্যে থাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ ও শাসন। এক জন ছাত্রের ভালো লেখাপড়ার পেছনে তাঁর অভিভাবকের ও শিক্ষকের গুরুত্ব সমান। এক জন আদর্শ শিক্ষক, শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ভূমিকায় কাজ করেন। জীবনে পরিবর্তন আসবেই। আর সেই পরিবর্তনেও শিষ্যের সাথে ছায়া হয়ে থাকবেন তাঁর গুরু।

পৃথিবীতে যত সম্পর্ক আছে এর মধ্যে গুরু-শিষ্যের সম্পর্কটা একটু ভিন্ন। এর মধ্যে থাকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ ও শাসন। এক জন ছাত্রের ভালো লেখাপড়ার পেছনে তাঁর অভিভাবকের ও শিক্ষকের গুরুত্ব সমান। এক জন আদর্শ শিক্ষক, শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ভূমিকায় কাজ করেন। জীবনে পরিবর্তন আসবেই। আর সেই পরিবর্তনেও শিষ্যের সাথে ছায়া হয়ে থাকবেন তাঁর গুরু।

ঠিক এমনই এক সম্পর্ক ভারত দলের সাবেক ক্রিকেটার এবং হেডকোচ রবি শাস্ত্রী এর সাথে বিরাট কোহলির। দুজনের সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় প্রশংসার কমতি নেই। কোহলির ভক্তদের থেকে প্রশংসা কিংবা কোহলি বিদ্বেষীদের কাছে থেকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য হরহামেশাই পেতে হয় রবি শাস্ত্রীকে। এসময় অবশ্য সবসময়ই পাশে পেয়েছেন স্বয়ং বিরাট কোহলিকে।

রবি শাস্ত্রীকে বরাবর সমালোচনা করা নেটিজেনদের কোহলি তো একবার বলেই বসলেন, ‘দশ নম্বর ব্যাটসম্যান থেকে একদম ওপেনার হয়ে যাওয়া, যেমন-তেমন কথা নয়। ওপেনার হিসেবে ৪১ গড়ও আছে রবি ভাইয়ের। এ রকম একটা চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়কে যারা বাসায় বসে বসে ট্রল করে, রবি ভাই তাদের পাত্তা দেন না। এরপরেও কারও সমালোচনা করার ইচ্ছে হলে বলব, আগে রবির মতো হয়ে দেখান। রবি যেসব বোলাদের সামলেছেন, তাদের সামলে দেখান! রবি যা করেছেন, সেগুলো করেন। সাহস দেখান দেখি। তারপর না হয় আপনার কথা শুনব আমরা।’

এগুলো তো ছিল অধিনায়ক কিংবা ব্যাটার কোহলির স্বর্ণালী সময়ে  ভারতের কোচ হিসেবে থাকা রবি শাস্ত্রীর সমালোচিত হওয়ার কথা। কিন্তু সময় বদলেছে। কোহলি তার ছন্দ হারিয়েছেন। হারিয়েছেন ১২০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার প্রতীক ক্যাপ্টেন ব্যাজটাও। কোচের ভূমিকায়ও আর নেই পছন্দের রবি শাস্ত্রী।

কোনো কিছুই যেন নিজের হয়ে কথা বলছেনা আগের দশকে আশ্চর্যজনক পারফর্ম করে গ্রেটদের কাতারে যাওয়া বিরাট কোহলির হয়ে। দিনে দিনে ভক্তের চাইতে বেড়ে চলেছে কোহলি বিদ্বেষীদের সংখ্যা। প্রতিনিয়ত বিদ্বেষমূলক মন্তব্য শুনতে হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় বেশ ক’বারই গুঞ্জন উঠেছিল দল থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন বিরাট কোহলি। তবে কোহলি নামটাই যে একটা ব্রান্ড। তাই কোহলি নামের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে বিশ্রাম এর নামে রাখা হয়েছিলো দল থেকে দূরে। তবে বড় আসরের বড় তারকা বলে কথা!

তাই শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে আবারো জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামবেন বিরাট কোহলি। কিন্তু নেটিজেনদের সমালোচনার জোয়ারে মনোযোগ নষ্ট হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। সবসময় পাশে পাওয়া রবি ভাইকে(রবি শাস্ত্রী) তাই এবারও পাশে পাচ্ছেন বিরাট কোহলি। পছন্দের কোচই কোহলিকে বাতলে দিয়েছেন সমালোচনা এড়িয়ে যাওয়ার পথ। কোহলিকে জানিয়ে দিয়েছেন কিভাবে প্রথম ম্যাচেই সমালোচনাকে মাটিচাপা দিয়ে চিন্তামুক্ত হয়ে খেলা যাবে।

শাস্ত্রী মনে করেন কোহলি এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই অন্তত হাফ-সেঞ্চুরি করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার আধিপত্য চলে আসবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে ৫০ রান করতে পারলেই সবাই তাই নিয়ে মেতে থাকবে। আগে কি হয়েছিল, তা নিয়ে বিশেষ মাথা ব্যাথা থাকবে না কারও। টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন হেড কোচ এক্ষেত্রে দাবি করেন যে, জনগণের স্মৃতি নিতান্তই ক্ষীণ। লোকে খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায় আগে কী হয়েছিল। আগে ভালো খেললেও যেমন লোকে ভুলে যায়, ঠিক তেমনই খারাপ খেললেও মনে রাখে না।

স্টার স্পোর্টস আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শাস্ত্রী বলেন, ‘ও অনেক শান্ত মনে মাঠে ফিরবে। কারণ, উত্তেজনাটা কেটে গিয়েছে। তুমি খেলা থেকে দূরে ছিলে। এবার সুর ধারানোর সময়। একেবারে প্রথম ম্যাচেই যদি ও পঞ্চাশ করতে পারে, বাকি টুর্নামেন্টের জন্য সবার মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। অতীতেও এমনটা দেখা গিয়েছে। আগে কী ঘটেছে, সে সব এখন অতীত। মানুষ খুব বেশিদিন কিছু মনে রাখে না।’

এছাড়াও শাস্ত্রী বলেন, ‘ওর (কোহলির) সঙ্গে আমার কথা হয়নি, তবে এটা রকেট সায়েন্স নয়, সবাই বোঝে। বড় খেলোয়াড়রা ঠিক সময়ে জ্বলে ওঠে। ওদের বিরতি দরকার হয়। মানসিক ক্লান্তি বিশ্বের সেরাদেরও কাবু করতে পারে। বিশ্বের এমন কোনও ক্রিকেটার নেই, যাকে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। আমি নিশ্চিত এই বিরতিটা শুধু শারীরিকভাবেই নয়, বরং মানসিকভাবেও তরতাজা করে তুলবে কোহলিকে।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...