ঢাকায় কি কি করবেন মার্টিনেজ?

শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশে আসার কথাই ছিল না। নিজের আগ্রহ থেকেই বাংলাদেশে আসার কথা জানান এমিলিয়ানো। তাই বাড়তি কোন অর্থ নিচ্ছেন না এই সফর থেকে।

কাতার বিশ্বকাপের নাটকীয় সেই ফাইনালের তখন শেষ মুহূর্তের খেলা চলছিল; কাউন্টার এটাকে সতীর্থের বাড়ানো এক লং বল থেকে গোল করার দারুণ এক সুযোগ পেয়ে যান ফরাসি স্ট্রাইকার কোলো মুয়ানি।

গোল আর মুয়ানির মাঝে তখন দূরত্ব কেবলই একজন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ; কিন্তু সেটা আর টপকে যাওয়া হয়নি তাঁর। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের পায়ে লেগে আটকে যায় বল, রক্ষা পায় আর্জেন্টিনার বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন।

টাইব্রেকারেও এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ছিলেন দুর্দান্ত, শুধু ফাইনালেই নয়, পুরো আসর জুড়েই আর্জেন্টিনার গোলবার আগলে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্সই ছিল সেদিন আলবিসেলেস্তাদের শেষ হাসির হাসতে পারার বড় কারণ।

তাই, তো ভক্তরাও তাঁকে স্থান দিয়েছে হৃদয়ের মনিকোঠায়। তর্কসাপেক্ষে লিওনেল মেসির পরে সবচেয়ে জনপ্রিয় আর্জেন্টাইন তারকা হয়তো এই এমি মার্টিনেজই।

সমর্থকদের ভালবাসায় সিক্ত এমিলিয়ানো মার্টিনেজ এবার আসছেন ভারতে। আর সেই সাথে ভ্রমণ করবেন বাংলাদেশেও। তিন জুলাই ভোরে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন তিনি। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে অবশ্য সেদিনই ফিরতি বিমানে চড়বেন এই তারকা।

এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে ভারতীয় উপমহাদেশে আনার মূল কৃতিত্ব শতদ্রু দত্তের। কলকাতা ভিত্তিক তাঁর স্পোর্টস প্রমোটার কোম্পানি শতদ্রু এসোসিয়েটস-ই মার্টিনেজকে কলকাতায় আনছেন। আর কলকাতার আগের দিন বাংলাদেশ ঘুরে যাবেন মার্টিনেজ।

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ সরাসরি আমস্টারডাম থেকে রওনা দিবেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। তাঁর সম্ভাব্য অবতরণ বাংলাদেশ সময় ভোর পাঁচটায়। বিমানবন্দর থেকে অবশ্য হোটেলে চলে যাবেন তিনি। সেখানে কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নেয়ার পর এক বা দুই ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন এস্টন ভিলার সুপারস্টার।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। যদিও সময় স্বল্পতার জন্য বাংলাদেশে থাকা বিপুলসংখ্যক আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সাথে দেখা হবে না এই গোলরক্ষকের।

অবশ্য তিন জুলাই পুরো দিনই এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে বাংলাদেশে রাখার ইচ্ছে ছিল আয়োজকদের। কিন্তু ডলারসহ নানা জটিলতায় বেশি সময় রাখা সম্ভব হবে না এই গোল্ডেন গ্লাভসজয়ীকে।

শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশে আসার কথাই ছিল না। নিজের আগ্রহ থেকেই বাংলাদেশে আসার কথা জানান এমিলিয়ানো। তাই বাড়তি কোন অর্থ নিচ্ছেন না এই সফর থেকে। শুধু বিমান ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান বহন করবে। অবশ্য এখন পর্যন্ত এই ঝটিকা সফরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

যদিও কলকাতায় এমিলিয়ানো মার্টিনেজের সূচি বেশ বড়। এসময় তিনি মোহনবাগান ক্লাব পরিদর্শন করবেন, তাদের একটি ম্যাচে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া একটি আলোচনা সভাতেও কথা বলতে দেখা যাবে তাঁকে। এর আগে শতদ্রু দত্তের উদ্যোগেই কলকাতা ঘুরে গিয়েছিলেন পেলে এবং ম্যারাডোনা।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার সেই মুহুর্তের পর কেটে গিয়েছে অনেক সময়; তবে ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়ে আরাধ্য দৃশ্যটি নিশ্চয়ই তাজা আছে এখনো। শুধু ট্রফি হাতে উদযাপন নয়, পুরো ম্যাচের গল্পই হয়তো গড় গড় করে বলে দিতে পারবেন তাঁরা; বলতে পারবেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের অতিমানবীয় সেইসব সেভের কথাও।

কিছুটা হলেও তাই আক্ষেপ হতে পারে বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা ভক্তদের, এত কাছে থেকেও ভালবাসার এমি মার্টিনেজকে একবার সরাসরি না দেখতে পারা নিশ্চয়ই অতৃপ্ত করবে তাঁদের।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...