কোন পজিশনে ‘পারফেক্ট’ বিরাট!

আলোচনার বিষয়বস্তু বিরাটের ব্যাটিং পজিশন। ঠিক কোথায় ব্যাটিং করলেই টি-টোয়েন্টিতে বিরাট হতে পারেন ইম্প্যাক্টফুল সে নিয়েই যেন আলোচনার শেষ নেই।

এক হাজার কুড়ি দিনের অপেক্ষার অবসান। বিরাট কোহলির আরও এক সেঞ্চুরি হাঁকাতে ঠিক ১০২০ টি দিন লেগে যায়। এই সময় পঞ্চার্ধো বহু ইনিংস খেললেও কেন জানি তা মনঃপুত হয়নি কারও। ‘বিরাট শেষ’ বলে দিতে পারলেই সবচেয়ে বেশি আনন্দ। তবে সে আনন্দের বানের জলে বাঁধ সাধে ৭১ তম সেঞ্চুরি।

বহুদিনের অপেক্ষা অবসানটা তিনি করলেন রাজকীয়ভাবে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম শতক তুলে নিয়ে। এর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩২টি অর্ধশতকের দেখা পেলেও শতক ছিল অধরা। সেটাও ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট। খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এলেন ঠিক বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে। এসেই জন্ম দিলেন নতুন এক আলোচনার।

আলোচনার বিষয়বস্তু বিরাটের ব্যাটিং পজিশন। ঠিক কোথায় ব্যাটিং করলেই টি-টোয়েন্টিতে বিরাট হতে পারেন ইম্প্যাক্টফুল সে নিয়েই যেন আলোচনার শেষ নেই। এই আলোচনার পালে আর একটু হাওয়া দেওয়াই যায়। নিজের ক্যারিয়ারে অধিকাংশ সময় বিরাট খেলেছেন তিন নম্বর পজিশনে। সেখানেই তিনি সিদ্ধহস্ত, অনুকরণীয়। তিন নম্বর পজিশনের জন্যে তিনিই আদর্শ।

তবে এবার ভারতীয় ক্রিকেট বোদ্ধা, সমর্থকদের চিন্তাভাবনায় যেন ধরেছে বিরাট এক ফাটল। মতের বেশ ভিন্নতা এসেছে। কেউ কেউ বলছেন বিরাটের খেলা উচিৎ ওপেনিংয়ে। আবার কেউ কেউ বলছেন তিনেই থেকে যাওয়া উচিৎ বিরাটের। খানিকটা শব্দব্যয় হচ্ছে চার নম্বর পজিশনে। তবে শেষমেশ ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট কোথায় খেলাবে তাঁকে সেটার অপেক্ষা করতেই হবে।

কিন্তু পরিসংখ্যান অন্তত বলে ওপেনিং পজিশনটা বিরাটকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এখন অবধি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তিনি নয়টি ম্যাচ খেলেছেন ওপেনিংয়ে। তাঁর মধ্যে দুইটিতে ছিলেন তিনি অপরাজিত। এখানটায় তিনি রান করেছেন বাকি দুই পজিশনের চাইতেও দ্রুতগতিতে। স্ট্রাইকরেটটা ছিল ১৬১ এর একটু বেশি। দুইটি অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন তিনি। তাছাড়া তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম শতকটাও তো এসেছে এই ওপেনিং পজিশনের ব্যাট করতে নেমে। ১২২ রানের অপরাজিত থাকা সে ইনিংসটাই তো বিরাটের ৭১তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি- সব ফরম্যাট মিলিয়ে।

অন্যদিকে তিন নম্বর পজিশনে মোট ৬৭টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন বিরাট। সেখানে স্ট্রাইকরেট ১৩৫। তিনি এখানটায় নিজের ক্যারিয়ারের সবটুকু সময়ই বিলিয়ে দিয়েছেন। পেয়েছেন ২৭টি অর্ধশতকের দেখা। সর্বোচ্চ ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছেন বিরাট তিন নম্বরে ব্যাট করে। ওপেনিং এবং তিন নম্বর পজিশনের ব্যাটিং গড়ের তফাৎ কেবল ২.৪৯। ওপেনিংয় পজিশনের ৫৭.১৪ গড় তাঁর।

এছাড়াও চার থেকে ছয় নম্বর পজিশন অবধি ব্যাট করেছেন বিরাট কোহলি। চার নম্বরে তাঁর স্ট্রাইকরেটটা ১৪১ এর বেশি। সেখানেও তিনি যথেষ্ট সাবলীল। ১৭টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে গড়টা বেশ নিচের দিকেই- ৪২.৪২। পরিসংখ্যানের এই লম্বা ফিরিস্তি শেষে অন্তত এইটুকু বলাই যায় ওপেনিং পজিশনে বিরাট কোহলি হতে পারেন ভারতের ‘গেমচেঞ্জার’।

বিরাট নিজেও হয়ত তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরাতে এমন কোন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না। এশিয়া কাপের মঞ্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে করা শতকটা তাঁকে প্রেরণা জোগাবে, উৎসাহ দেবে। তিনি হয়ত নতুন এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...