নুয়ান থুসারার মধ্যে এই ‘এক্স ফ্যাক্টর’ আছে। কখনও কখনও তিনি মার খাবেন, তবে কোনো কোনো দিন এরকম বিধ্বংসী হয়ে উঠবেন। ম্যাচ জেতানোর রসদ তার ভেতর আছে বলেই এবারের আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সঙ্গে তুমুল লড়াই করে তাকে প্রায় ৫ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
তবে তাকে নিয়ে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি কিংবা ভাবনায় ঘাটতি ছিল বলেই মনে হয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপকে তিনি চমকে দিয়েছেন। এই কারণেই আসলে তার ওই দুই ওভারে ব্যাটিং লাইন আপ ওভাবে ধসে পড়েছে।
স্লিঙ্গিং অ্যাকশন তো আছেই, অনেক লোয়ার ট্র্যাজেক্টরিতে বল রিলিজ আর সঙ্গে সুইং ও লেট সুইং মিলিয়ে তিনি তাৎক্ষণিক আতঙ্ক তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মনে। তিনি ভালো বল করেছেন বটে, তবে সত্যি বলতে তাওহীদ হৃদয়ের ডেলিভারিটি ছাড়া কোনোটি ‘আনপ্লেয়েবল’ ছিল না। কিন্তু সবাই সম্ভবত তার অ্যাকশন আর হাতের অবস্থানের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়ায় বলের দিশা হারিয়ে ফেলেছেন।
থুসারাকে যে আজকে খেলানো হবে, এটা একরকম অনুমিতই ছিল, মাথিসা পাথিরানা যেহেতু ছিলেন না। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে মনে হলো, থুসারা তাদের জন্য ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ হয়ে এসেছেন। সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা ওখানেই হাতছাড়া।
ম্যাচ ও সিরিজ হারার পর সান্ত্বনা খোঁজা মানায় না। তবে সিরিজ জুড়ে রিশাদের বোলিং ছিল দারুণ। আজকের ব্যাটিং তো বটেই। একটা সময় আমরা প্রেসবক্সে মজা করে বলতাম, ‘রিশাদের তো বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংয়ের উন্নতিই বেশি হচ্ছে।’
ভালো ব্যাপার যে, এখন তার বোলিংয়েও অনেক উন্নতি দেখা যাচ্ছে। ব্যাটিংয়ে তিনি সবসময়ই একটি-দুটি বড় ছক্কা বা টুকটাক ক্যামিও ইনিংস খেলতেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো ইনিংস খেলেছেন কিছু। এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ব্যাটিংয়ের ভালো বিজ্ঞাপন মেলে ধরলেন।
তার ওপর বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিনিয়োগ আছে বেশ। তাকে যথেষ্ট যত্ন করা হয়েছে, সমর্থন দেওয়া হয়েছে। ম্যাচ সংখ্যা দেখে সেটা বোঝা যাবে না। তাকে জাতীয় দলের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এইচপি বা বিভিন্ন প্রোগ্রামে সবসময় রাখা হয়েছে কয়েক বছর ধরেই। এখন একটু একটু করে প্রতিদান মিলতে শুরু করেছে। সিরিজ হারের হতাশায় তিনিই একটু ফুরফুরে বাতাস।