পেসার থেকে স্পিনের বাদশাহ

অনেক সময় দলের প্রয়োজনে ক্রিকেটারদের ভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেকে আবার ক্রিকেটার হওয়ার পথচলায় ভিন্ন কোন কিছু খুঁজে পান। আমরা এমন অনেক গল্প শুনেছি যে কোন বোলার কোচের পরামর্শে ব্যাটসম্যান হয়ে গিয়েছিন। আবার কোন ব্যাটসম্যান হয়ে গিয়েছেন পুরোদস্তুর বোলার। কেউ আবার পেসার থেকে পুরোদস্তর স্পিনার বনে গেছেন। অনেকে কিংবদন্তিও হয়ে গেছেন।

আমরা প্রায়ই বলি যে কোন ক্রিকেটার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন ক্রিকেটার হবার। তবে স্বপ্নটা যিনি দেখেন, সেই ক্রিকেটারের জন্য লক্ষ্যটা আরো নির্দিষ্ট হয়। কেউ ব্যাটসম্যান হতে চান, কেউ বোলার হতে চান। আসলে এটাও ঠিক হয়নি। কেউ ওপেনার, কেউ পেসার আবার কেউ স্পিনার হতে চান। তবে সব ক্রিকেটারের কী সেই স্বপ্ন পূরণ হয়।

অনেক সময় দলের প্রয়োজনে ক্রিকেটারদের ভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেকে আবার ক্রিকেটার হওয়ার পথচলায় ভিন্ন কোন কিছু খুঁজে পান। আমরা এমন অনেক গল্প শুনেছি যে কোন বোলার কোচের পরামর্শে ব্যাটসম্যান হয়ে গিয়েছিন। আবার কোন ব্যাটসম্যান হয়ে গিয়েছেন পুরোদস্তুর বোলার। কেউ আবার পেসার থেকে পুরোদস্তর স্পিনার বনে গেছেন। অনেকে কিংবদন্তিও হয়ে গেছেন।

  • মুত্তিয়া মুরালিধরন (শ্রীলঙ্কা)

বিশ্ব ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরণ। এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক তিনিই। ইতিহাসের একমাত্র বোলার হিসেবে টেস্টে ৮০০ উইকেট।

বল ঘুরিয়ে বিরল সব কীর্তি করা এই স্পিনারের ক্রিকেট যাত্রাটা শুরু হয়েছিল মিডিয়াম পেসার হিসেবে। স্কুলের হয়ে নিয়মিত পেস বোলিং করতেন মুরালিধরণ। তবে কোচের পরামর্শে তখন স্পিন বোলিং এ মনোযোগ দেন এই কিংবদন্তি।

  • অনিল কুম্বলে (ভারত)

ভারত ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম স্পিনারের নাম অনিল কুম্বলে। তবে ভারতের এই স্পিনারও তাঁর ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন পেসার হিসেবে। সেইসময় অনেকেই তাঁর টেকনিকের ত্রুটি ধরিয়ে দেয়।

বিশেষ করে তাঁর ভাইয়ের পরামর্শে পরে লেগ স্পিন করা শুরু করেন। বাকিটা তো ইতিহাসই। টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক অনিল কুম্বলে।

  • মোহাম্মদ রফিক (বাংলাদেশ)

আজো বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা স্পিনার হিসেবে বিবেচিত হন মোহাম্মদ রফিক। আব্দুর রাজ্জাক কিংবা সাকিব আল হাসানের মত স্পিনাররা আসার পরেও আজো দেশটি রফিকের মত একজন স্পিনারের আক্ষেপ করে। বাংলাদেশের কিংবদন্তি এই স্পিনারও লম্বা সময় খেলেছেন মিডিয়াম পেসার হিসেবে।

এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটেও পেসার হিসেবে খেলেছেন। একদিন নেটে ওয়াসিম হায়দার তাঁকে স্পিন বল করতে বলেন। সেদিন স্পিন করে নেটে উইকেটও পেয়েছিলেন। এরপর আর কখনো পেস বোলিং এ ফিরে যাননি মোহম্মদ রফিক।

  • রবীচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)

অশ্বিন মূলত তাঁর ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে। ওদিকে বোলার হিসেবেও তাঁর যাত্রাটা স্পিন দিয়ে শুরু হয়নি। মিডিয়াম পেসার হিসেবেই খেলেছেন স্কুল ক্রিকেট।

পরবর্তীতে মনোযোগ দেন স্পিন বোলিং এর দিকে। এখন তিনি ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা স্পিনারদের একজন। ওপেনার হতে না পারলেও এখনো প্রায়ই লোয়ার মিডল অর্ডারে তাঁর ব্যাটিং প্রতিভা দেখা যায়।

  • যুজবেন্দ্র চাহাল (ভারত)

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের অন্যতম সেরা স্পিনারও তাঁর বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছেন মিডিয়াম পেসার হিসেবে। তখন তাঁর বাবা তাঁকে স্পিনার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পেসার হওয়ার জন্য যে একটা শক্ত শারীরিক কাঠামো প্রয়োজন সেটাই বুঝিয়েছিলেন।

এছাড়া চাহাল পেসার হলে তাঁর ইনজুরিতে পড়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড় যেত। এরপরই নিজের লেগ স্পিনের দিকে মনোযোগ দেন চাহাল। চাহাল বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।

  • আজাজ প্যাটেল (নিউজিল্যান্ড)

নিউজিল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ শুরু করেছেন আজাজ প্যাটেল। নিজের অভিষেক ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। তবে নিউজিল্যান্ডের এই বাঁহাতি স্পিনার একুশ বছর পর্যন্তও ছিলেন মিডিয়াম পেসার। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি এখন খেলছেন স্পিনার হিসেবে।

  • বরুণ চক্রবর্তী (ভারত)

তিনি ভারতের নতুন দিনের রহস্য বোলার। আইপিএলে এই সময়ে তাঁর বেশ নামডাক। তবে, তামিল নাড়ুর এই ক্রিকেটার ক্যারিয়ার শুরু করেন পেসার হিসেবে। কালক্রমে ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে তিনি স্পিনার বনে যান। বলা হচ্ছে, আসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বড় ভরসা হবেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...