কেন অধিনায়ক হতে পারেননি শেবাগ?

ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁর আগমণ ঝড়ো হাওয়ার মতো। শচীনের দ্যুতিময়তা কিংবা দ্রাবিড়ের কব্জির মোচড়ের চাইতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রকৃত টেস্ট ওপেনারের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছেন এই তারকা, ভারতের হয়ে প্রথম ত্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড তাঁর দখলেই। তবে এত সব রেকর্ড নিজের দখলে থাকলেও ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক না হতে পারার আক্ষেপ আজীবন পোড়ায় বীরেন্দর শেবাগকে। 

ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁর আগমণ ঝড়ো হাওয়ার মতো। শচীনের দ্যুতিময়তা কিংবা দ্রাবিড়ের কব্জির মোচড়ের চাইতে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রকৃত টেস্ট ওপেনারের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছেন এই তারকা, ভারতের হয়ে প্রথম ত্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড তাঁর দখলেই। তবে এত সব রেকর্ড নিজের দখলে থাকলেও ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক না হতে পারার আক্ষেপ আজীবন পোড়ায় বীরেন্দর শেবাগকে। 

২০০৩ থেকে ২১০২ – এই নয় বছরের মাঝে বিভিন্ন সময়ে ১২টি ম্যাচে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন শেবাগ। এর মাঝে ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টি টোয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। কিন্তু এর কোনোটিতেই তিনি নিয়মিত অধিনায়ক ছিলেন না। 

শেবাগের সামনে অধিনায়ক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল ২০০৫ সালে। গ্রেগ চ্যাপেল কোচ হয়ে আসার পর ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তখনকার অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে। ফলশ্রুতিতে অধিনায়কত্ব হারানোর পাশাপাশি শীঘ্রই দল থেকে বাদ পড়েন সৌরভ।

তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব পান রাহুল দ্রাবিড়। দুই বছর বাদে দ্রাবিড় সরে দাঁড়ালে মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়ক এবং বীরেন্দর শেবাগ সহ অধিনায়ক নির্বাচিত হন। কিন্তু ভাগ্যের অমোঘ লীলায় সহ অধিনায়ক থেকে আর কখনো পূর্ণাঙ্গ অধিনায়ক হয়ে উঠা হয়নি শেবাগের। 

এক টিভি সাক্ষাৎকারে শেবাগ জানান তিনি কিভাবে অধিনায়ক হওয়ার খুব কাছাকাছি চলে আসলেও শেষপর্যন্ত ভাগ্যের ফেরে সেটা আর হয়ে উঠেনি। তিনি বলেন, ‘গ্রেগ চ্যাপেল কোচ হয়ে আসার পর তাঁর প্রথম বক্তব্যই ছিল শেবাগ হতে যাচ্ছে আমাদের পরবর্তী অধিনায়ক। কিন্তু জানি না এর পরের দুই মাসে কি হল, অধিনায়ক হওয়া তো দূরের কথা আমি দল থেকেই বাদ পড়লাম।’

তিনি জানান, ‘আমি সবসময়েই বিশ্বাস করি আমাদের দেশে দারুণ সব কোচ আছেন যারা জাতীয় দলকে আরো ভালোভাবে সামলাতে পারবেন। আমাদের বিদেশি কোচের তেমন দরকার নেই। আমি যখন ক্রিকেট খেলেছি তখন সিনিয়রদের জিজ্ঞেস করেছি জন রাইটের পর আমাদের আরেকজন বিদেশি কোচ কেন লাগবে? তাঁদের প্রায় বেশিরভাগই জবাব দিয়েছেন ভারতীয় কোচেরা তাঁদের পছন্দের খেলোয়াড়ের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হন। অন্যদিকে একজন বিদেশি কোচ পুরো ব্যাপারটিকে আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে। তবে আমার মনে হয় একজন বিদেশি কোচের জন্যও শচীন, দ্রাবিড়, গাঙ্গুলি কিংবা লক্ষণকে সামলানো বেশ কষ্টকর ব্যাপার।’ 

ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দুই বিদেশি কোচ হলেন – জন রাইট এবং গ্যারি কার্স্টেন। মজার ব্যাপার হলো তাঁদের দুজনের অধীনেই নিয়মিত সুযোগ পেয়েছেন শেবাগ। রাইটের অধীনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন তিনি, অন্যদিকে কারস্টেন তাঁকে এনে দেন বিশ্বজয়ের স্বাদ।

রাইটের সময়েই শেবাগ মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পান এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে মুলতানে বিখ্যাত ২০৯ রানের ইনিংস খেলেন। মাঝে গ্রেগ চ্যাপেলের অধীনে খেললেও তাঁদের জুটিটা তেমন জমেনি। তিনজনের মাঝে শেবাগ এগিয়ে রাখেন কার্স্টেনকে, তাঁর মতে ক্রিকেটারদের থেকে সেরাটা বের করে আনতে জানতেন এই প্রোটিয়া কোচ। 

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভারতীয় দলের কোচের প্রয়োজন নেই। বরং তাঁদের দরকার একজন ম্যানেজার যার কিনা খেলোয়াড়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। একজন কোচের জানা উচিত কোন খেলোয়াড়ের কতটুকু অনুশীলন লাগবে এবং কার্স্টেন এই ক্ষেত্রে সেরা ছিলেন।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...