হাতুরু আসার পরই কেন সরব হলেন সভাপতি!

হঠাৎ সরগরম ক্রিকেট পাড়া। বোর্ড সভাপতির অভিযোগ, দলে আছে অতিমাত্রায় গ্রুপিং, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের মধ্যে বন্ধুত্বটা ঠিক আগের মতো নেই।

হঠাৎ সরগরম ক্রিকেট পাড়া। বোর্ড সভাপতির অভিযোগ, দলে আছে অতিমাত্রায় গ্রুপিং, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের মধ্যে বন্ধুত্বটা ঠিক আগের মতো নেই। দীর্ঘ সময় ধরে এমন একটা গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে। দুজনের কেউই অবশ্য প্রকাশ্যে সেটি স্বীকার করেননি। তাই ঘটনার সত্যতাও প্রমাণিত হয়নি। তবে দুজনের বন্ধুত্বে ফাটল ধরার ব্যাপারটা এবার প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ভাষ্যে।

দলের কোচ এখন চান্দিকা হাতুরুসিংহে। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি বাংলাদেশ দলের কোচ হয়ে এসেছেন। তাঁর সাথেও সিনিয়রদের সম্পর্ক সুখকর নয় বলে একটা ‘ওপেন সিক্রেট’ চাউর আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায। এই বাস্তবতার মধ্যেই কেন মুখ খুললেন বোর্ড সভাপতি?

হাতুরুসিংহে অবশ্য এবার এসেই দাবি করেছেন, সিনিয়রদের সাথে তাঁর কোনো ঝামেলা নেই। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘দল থেকে কাউকে বাদ দেওয়া নিয়ে কোচের আলাদা ভাবনা থাকতে পারে। তো ঐ সময়ে, হাতুরু ভেবেছিল মমিনুলের চেয়ে বেটার অপশন আছে, কিংবা মুশফিকের চেয়ে ভাল উইকেটরক্ষক আছে। এটা কোচের নিজস্ব ভাবনা। এবারে এসে হাতুরুর ভাবনা হচ্ছে, আমি যতটা শুনেছি, ফিল্ডিংয়ে ভাল করার ব্যাপারে ওর পরিকল্পনা আছে। আমাদের ফিল্ডিংয়ের মান কিন্তু ভাল নয়।’

তারপরও ঘুরে ফিরে একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খায় যে, হাতুরু কি সিনিয়রদের সামলাতে পারবেন? এ ব্যাপারে পাপন হাতুরুর সামনে এক ধরনের চ্যালেঞ্জই দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা কঠিন। এমনকি ডোমিঙ্গোর সাথেও সিনিয়রদের সমস্যা ছিল। সে শেষমেশ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সমস্যা হচ্ছে, তারা ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা জানায় না। তাই হাতুরুর জন্য এটা প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে কোনো সিনিয়র পারফর্ম না করে এবার টিকতে পারবে না। আমি জানি, কেউ ফর্মে না থাকলে, হাতুরু ঠিকই দল থেকে তাঁকে বাদ দিয়ে দিবে।’

বিসিবি সভাপতির কথাতেই স্পষ্ট, দলের অন্দরমহেল বেশ কিছু সমস্যা এখনও বিদ্যমান। একই সাথে এটাও স্পষ্ট যে, সে সব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না পারলে সামনের ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভরাডুবি ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

প্রত্যেক কোচের সাথেই সিনিয়রদের বৈরীতা, এটা যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে স্বাভাবিক চিত্র হয়ে উঠেছে। যা কিনা একটা পেশাদার দলের জন্য বেশ ক্ষতিকরও বটে। সব কিছু মিলিয়ে, হাতুরু এমন সময়েই দলের দায়িত্ব নিয়েছেন, যেখানে তাঁর দলের সফলতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি আর বিষয় সম্পর্কেও ভাবতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে নিজের ২.০ যাত্রাটা নিশ্চিতভাবেই অতটা মসৃণ হচ্ছে না চান্দিকা হাতুরুসিংহের জন্য।

নাকি বিষয়টা উল্টো, হাতুরুসিংহের চলার পথ মসৃন করতেই এই সময়ে এসে মুখ খুলতে হল বোর্ড সভাপতি, যখন কি না ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য হাতে খুব বেশি সময় বাকি নেই। বোর্ড কি ভাবছে, সকল পাপ মোচনের জন্য এটাই আদর্শ সময়? হাতুরু আসার আগেই তো তাঁরাই ‘কড়া হেডমাস্টার’ খুঁজছিলেন। তাঁর আরও কড়া হওয়ার রাস্তাটাই কি খুলে দিলেন না বোর্ড সভাপতি?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...