২০৩.৭৭! উইল জ্যাকস ঠিক কতটা বিধ্বংসী ছিলেন সেটা সম্ভবত তাঁর স্ট্রাইকরেট দেখেই আন্দাজ করে নেওয়া যায়। সাগরিকার বুকে ইংরেজ এক ব্যাটারের তাণ্ডবলীলা চলল। তাতে করে ঘরের মাঠে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কপাল পুড়েছে। হারতে হয়েছে বিশাল ব্যবধানে।
দশম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ((বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনই হয়েছে রান উৎসব। সূচনা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হাত ধরে। আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে উইল জ্যাকসই সূচনা করেছেন সেই উৎসব। এদিন টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম। তার নেওয়া সিদ্ধান্তকে অক্ষরে অক্ষরে ভুল প্রমাণ করেছেন কুমিল্লার ব্যাটাররা।
আল-আমিনের ওভারে দুই চার মেরে শুরুটা অবশ্য করেছিলেন লিটন দাস। বাংলাদেশি এই ওপেনারও এদিন অর্ধশতকের দেখা। তবে নিজের দারুণ ইনিংসটাকে শেষ অবধি তিন অংকের ঘরে নিয়ে যেতে পারেননি কুমিল্লার অধিনায়ক। কিন্তু, জ্যাকস ঠিকই পেরেছেন। বাউন্ডারির বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে।
৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভর করে বড় সংগ্রহের স্বপ্নই দেখেছিল কুমিল্লা। সেটা বাস্তবায়ন করেছেন জ্যাকস। চট্টগ্রামের বোলারদের উপর ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেন। আল আমিন, শহিদুল ইসলামরা দিশেহারা অবস্থা পার করেছেন পুরো বিশ ওভার জুড়ে। ওপেনিংয়ে নেমে একেবারে শেষ অবধি টিকে থেকেছেন উইল জ্যাকস।
তাতে করেই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান ডানহাতি এই ব্যাটার। স্রেফ ৫৩ বলে ১০৮ রান করে অপরাজিত থেকেছেন জ্যাকস। মারকাটারি ইনিংসে চারের ঠিক দ্বিগুণ ছক্কা হাঁকিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইংলিশ ব্যাটার।
৫টি বাউন্ডারি মেরেছেন জ্যাকস। চট্টগ্রামের গ্যালারিতে থাকা কুমিল্লার সমর্থকদের দশবার ছক্কার উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছেন তিনি। তাতে করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স গড়ে রানের পাহাড়। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ দলগত সংগ্রহ নিজেদের করে নেয় কুমিল্লা। ২৩৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে কুমিল্লার ব্যাটাররা। সে যাত্রায় তারা উইকেট হারিয়েছে মোটে তিনটি উইকেট।
দলকে সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়ে দেওয়ার পথে জ্যাকসও উঠেছেন সবার উপরে। এবারের বিপিএলে এখন অবধি সর্বোচ্চ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন জ্যাকস। ব্যক্তিগত দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন উইল জ্যাকস। তবে লিটন দাসও সে পথে এগোতে পারতেন। বহুদিন বাদে লিটন দাস আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের ইনিংসটি শুরু করেছিলেন। মাত্র ২৬ বলে তিনিও ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন।
দারুণ খেলতে থাকা ইনিংসটির পরিসমাপ্তি ঘটে পরবর্তী ৫ বলের মধ্যেই। এখানেই আসলে উইল জ্যাকসরা নিজেদের সামর্থ্যের চিত্র অংকন করেন। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন মানসিকতা কিংবা সক্ষমতার পার্থক্য।