নানা নাটকীয়তার পর দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন চান্দিকা হাতুরুসিংহে। প্রথম মেয়াদের শেষটা সুখকর না হওয়ায় সবাই ধরে নিয়েছিলেন বাংলাদেশে আর ফেরা হচ্ছে না এই লংকানের। তবে দুই বছরের চুক্তিতে বাংলাদেশে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করবেন তিনি। হাতুরুর ফেরার সাথে সাথে কি তবে কপাল খুলবে তাঁর একসময়ের প্রিয়পাত্র সৌম্য সরকারের?
বাংলাদেশ জাতীয় দলে সৌম্য সরকারের আগমণ ধূমকেতুর মতো। তামিম ইকবালের একজন যোগ্য সঙ্গীর জন্য বাংলাদেশ যখন মাথা ঠুকে মরছে, ঠিক সেই সময়ে সৌম্যর উত্থান। মারকুটে ব্যাটিং দিয়ে ক্রমেই নিজের জায়গা পাকা করে নেন জাতীয় দলে, হয়ে উঠেন কোচ হাতুরুসিংহের অন্যতম প্রিয়পাত্র। ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জেতার পেছনে সৌম্যর বড় ভূমিকা ছিল।
কিন্তু সৌম্যের ব্যাটিং মধুচন্দ্রিমা ফুরোতে সময় লাগেনি। যত দিন গড়িয়েছে সৌম্যের ব্যাটের ধারও কমেছে। তবে সবাই আশা হারালেও কোচ হাতুরুসিংহে কিন্তু আশায় বুক বেঁধেছেন প্রিয় শিষ্যকে নিয়ে। তিনি যতদিন দায়িত্বে ছিলেন, টানা সুযোগ পেয়েছেন সৌম্য।
কিন্তু, হাতুরুর বিদায়ের পর আর সৌম্যকে দলে রাখার বিলাসিতা দেখাননি নির্বাচকরা। এরপর বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলে যাওয়া – আসার মাঝে থাকলেও পুরনো সেই বিধ্বংসী সৌম্যকে আর পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রশ্নটা হল হাতুরুর দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার সাথে সাথে কি ক্যারিয়ারের পুর্নজন্ম হবে সৌম্যের?
সৌম্যের ব্যাটিং পারফরম্যান্স অবশ্য নেতিবাচক উত্তরই দিচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলই যার প্রমাণ, লম্বা সময় ধরে অফফর্মে থাকা সৌম্যের ব্যাট হাসেনি এই টুর্নামেন্টেও। ঢাকা ডমিনেটর্সের হয়ে মাঠে নামা এই ব্যাটার গোটা টুর্নামেন্টে পঞ্চাশ পেরিয়েছেন মোটে একবার। সেই ফিফটিও এসেছে বেশ কষ্টে, খুলনার বিপক্ষে খেলেন ৪৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংস যা কিনা এই যুগের সাথে বড় বেমানান।
তবে হাতুরুসিংহের আগমণের সুবাদে অনেকেই সৌম্যের ক্যারিয়ারের নতুন শুরু দেখছেন। সবার ধারণা এই ওপেনারকে সবচেয়ে ভালো বুঝছেন হাতুরুই। দুজনের চমৎকার বোঝাপড়ার সুবাদেই সেই সময়ে সেরা ফর্মের সৌম্যকে পেয়েছিল বাংলাদেশ।
তাছাড়া তাঁর প্রতিভা নিয়ে কারোরই সন্দেহ কোনোকালেই ছিল না। সুতরাং সঠিক গাইডলাইন আর কঠোর পরিশ্রম করার পাশাপাশি হাতুরু নামের পরশপাথরের ছোঁয়ায় সৌম্য বদলে যেতেই পারেন এ আর আশ্চর্যের কি!
সৌম্য অবশ্য গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দলে ছিলেন। সেখানেও অবশ্য নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। এরপর থেকে জাতীয় দলের বাইরে আছেন। বিপিএলের পর তাঁকে রীতিমত খ্যাপ ক্রিকেট খেলতেও দেখা গেছে।
আর এবারের কাজটা একটু কঠিন তাঁর জন্য। পুরনো তামিম ইকবাল তো আছেনই, পাশাপাশি উঠে এসেছেন নাজমুল শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, জাকির হাসানরা। সৌম্যকে তাই শুরুটা করতে হবে ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়েই। সামনেই শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। দেখা যাক নতুন শুরুর যাত্রাটা সেখান থেকেই শুরু করতে পারেন কিনা এই তারকা।