সব কন্ডিশনের মাস্টারদের সেরা একাদশ

উইজডেন সব পরিস্থিতিতে ভালো খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের নিয়ে একটা একাদশ গঠন করেছে। এই ক্ষেত্রে উইজডেন দেখিয়েছে যে অনেক গ্রেট ক্রিকেটারদেরও বিদেশে কঠিন পরিস্থিতিতে পারফর্ম করতে সমস্যা হয়েছে। যেমন শেন ওয়ার্নের ভারতে, বা মুরালিধরণের অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে, স্টিভ ওয়াহর শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইত্যাদি।

উইজডেনের সব পরিস্থিতিতে ভালো খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের নিয়ে একটা একাদশ গঠন করেছে। এই ক্ষেত্রে উইজডেন দেখিয়েছে যে অনেক গ্রেট ক্রিকেটারদেরও বিদেশে কঠিন পরিস্থিতিতে পারফর্ম করতে সমস্যা হয়েছে। যেমন শেন ওয়ার্নের ভারতে, বা মুরালিধরণের অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে, স্টিভ ওয়ার শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইত্যাদি।

আবার অন্যদিকে, কিছু ক্রিকেটার সব দেশে সব পরিস্থিতিতে একটা বেঞ্চমার্ক রেখে পারফর্ম করেছেন। যে সব ক্রিকেটার এই হোম আওয়ে, দেশ বিদেশ নির্বিশেষে ভালো পারফর্ম করেছেন, তাদের নিয়ে উইজডেন এই একাদশ তৈরি করেছে।

এখানে মাপকাঠি হিসেবে সেই ক্রিকেটারের কোনো একটি দেশের মাটিতে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্সকে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, কেউ যদি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সবচেয়ে খারাপ গড় রেখে থাকেন এবং সেই গড়টিও অন্যদের খারাপতম পারফরম্যান্সের থেকে ভালো হয়, তাহলে তিনি নির্বাচিত হবেন। ( এখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বদলে প্রত্যেক ক্রিকেটারের সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড যে দেশে, সেটা দেখা হবে)!

  • গ্লেন ম্যাকগ্রা (অস্ট্রেলিয়া)

সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড পাকিস্তানে, ১৯ টি উইকেট নিয়েছেন, ৩১ গড়ে। বাকি সব দেশে ম্যাকগ্রার গড় ২৪ বা তার কম, যেখানে তিনি অন্তত ৫ টি টেস্ট খেলেছেন। অর্থাৎ ম্যাকগ্রা সব দেশেই সফল। ৩১ গড় অনেক বোলার গোটা কেরিয়ার শেষ করেন। সেই হিসেবে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স হিসেবে এটা বেশ ভালো।

  • ল্যান্স গিবস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে, ৩৩ গড়ে ৫৯ উইকেট। ভারতের মাটিতে তিনি ২৩ গড়ে ৩৯ উইকেট নিয়েছেন।

  •  কার্টলি অ্যামব্রোস (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

ইনি চরম ধারাবাহিক ফাস্ট বোলার ছিলেন, সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ম্যাকগ্রার মতই, পাকিস্তানে, ২৫ গড়ে ১৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অ্যামব্রোস এর রেকর্ড অসাধারণ, ২০র ও কম গড়ে ৭৮ টি উইকেট!! তার মধ্যে সেই ৭/১ এর স্পেল আছে। অ্যামব্রোস ছিলেন ৬’৭” লম্বা।

  • ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

তাঁর সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ইংল্যান্ডে, ৩২ গড়ে ২৩ উইকেট। স্টেইন তাঁর ক্যারিয়ারে ৮ টি আলাদা দেশে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। তার মধ্যে ৫ টি এশিয়ার মাটিতে। ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে গড় ৩০ এর বেশি হলেও, গুরুত্বপূর্ন সময়ে ৫ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন। তাই তিনিও এই একাদশের গুরুত্বপূর্ন সদস্য ও তাঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা বোলার।

  • অ্যালান ডেভিডসন (অস্ট্রেলিয়া)

বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার, ইনি আক্ষরিক অর্থেই সব কন্ডিশনের সেরা ছিলেন। এর সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ইংল্যান্ডে ২৫ গড়ে ৩৩ উইকেট!! ভারতে এর রেকর্ড অবিশ্বাস্য, ১৫.৭৬ গড়ে ৩০ উইকেট!!

  • এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা) – উইকেটরক্ষক

প্রতিটি দেশে এর গড় ৪২ বা তার বেশি, ( অন্তত দুটি টুর করেছেন যেখানে)। উইকেটকিপিং দক্ষতা তাকে এই দলে অপরিহার্য সদস্য করেছে।

  •  অ্যালান বোর্ডার (অস্ট্রেলিয়া) – অধিনায়ক

ইনি ৮ টি দেশে খেলেছেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বাদে সব দেশে অন্তত একটি সেঞ্চুরি করেছেন। শেষ বয়সে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি সিরিজ খেলেন, এবং ৩৯ বছর বয়সেও ৩৮ গড় নিয়ে শেষ করেন। বিশেষত তখন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং খুবই শক্তিশালী ছিল। বর্ডারের গড় ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ৫৩, এবং সেখানে খেলা ১০ টি টেস্টের প্রতিটিতে ম্যালকম মার্শাল ছিলেন।

  • শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)

টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৫১ টি সেঞ্চুরি। সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড জিম্বাবুয়েতে, যেখানে তিনি মাত্র ৪ টি টেস্ট খেলে ৪০ গড়ে ২৪০ রান করেছেন। শচীন যে ১০ টি দেশে খেলেছেন, প্রতি দেশে ৪০ এর বেশি গড় রাখার রেকর্ড করেছেন। অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের মাটিতে তার ৫ বা তার বেশি শতরান আছে।

  • গ্রেগ চ্যাপেল (অস্ট্রেলিয়া)

শচীনের সঙ্গে সম্পর্ক যেমনই হোক, এই দলে শচীনকে গুরু গ্রেগ এর সাথেই ব্যাট করতে হবে। গ্রেগ চ্যাপেল শচীনের মতই যে কটি দেশে খেলেছেন সব জায়গায় ৪০ এর বেশি গড় রেখেছেন। তাঁর সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ইংল্যান্ডে, ৪১ গড়ে ১০২০ রান।

  • বব সিম্পসন (অস্ট্রেলিয়া)

সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজে ৫৬৮ রান, ৩৫ গড়ে, এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ৬১৯ রান ৩৯ গড়ে। কেরি প্যাকার যুগে ইনি দুর্বল অস্ট্রেলিয়ান দলের অধিনায়কত্ব করেন ৪০ বছরের বেশি বয়সে।

  • সুনীল গাভাস্কার (ভারত)

আসলে একাদশটি উল্টো অর্ডারে সাজানো। বোলার থেকে শুরু করে ওপেনিং ব্যাটসম্যান দিয়ে শেষ। সিম্পসন এর ওপেনিং পার্টনারকে হতে পারেন আমাদের সানি জি ছাড়া? যার সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড ৩৭ গড়ে ১৮৬ রান শ্রীলঙ্কার মাটিতে বিতর্কিত সিরিজে। বাকি যে দেশে তিনি পা দিয়েছেন, রান এবং সেঞ্চুরির ফোয়ারা ছুটেছে। অভিষেক সিরিজে ১৫৪.৮ গড়ে ৭৭৪ রান এখনও লোকগাথা যা নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা ক্যালিপসো লিখেছিল।

আপনাদের কি মনে হয় এই একাদশ নিয়ে? বর্তমান যুগের কেউ কি আসতে পারেন এই দলে? সুস্থ আলোচনা হোক। মনে রাখতে হবে, যোগ্যতার মাপকাঠি হলো যে দেশে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স, সেটা কতটা ভালো, সেটা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...