বিশ্বকাপ দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে রাখার দাবিটা সবসময়ই ছিল; তবে এশিয়া কাপে শামিম হোসেন পাটোয়ারি, আফিফ হোসেনদের ব্যর্থতায় সেই দাবি আরো জোরদার হয়। ফলে শেষ সময়ে আরেকবার পরখ করেদেখার জন্য বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজে সুযোগ দেয়া হয় রিয়াদকে।
আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে কি কিছুটা হলেও এগিয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ? কিউইদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন রিয়াদ। সতীর্থদের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে এই অভিজ্ঞ তারকা চেষ্টা করে গিয়েছেন সাধ্যের সবটুকু দিয়ে।
৭৩ বলে ৪৯ রান – এই ইনিংস মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে পুরোপুরি বিশ্লেষণ করতে পারে না। সংখ্যাতত্ত্বে বেশ রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করেছেন মনে হলেও রিয়াদ ছিলেন ইতিবাচক, জয়ের আশা যতক্ষণ ছিল ততক্ষণ রান তুলেছেন বলের সাথে পাল্লা দিয়ে।
এই যেমন তামিম ইকবাল আউট হওয়ার সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের রান ছিল ১৮ বলে ১৫। এবং শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান শেখ মেহেদির ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর নামের পাশে ছিল ৫৩ বলে ৪০ রান। এতেই স্পষ্ট, সতীর্থ ব্যাটারদের কারণেই শেষদিকে খোলসে ঢুকে যেতে হয়েছে রিয়াদকে।
তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ইনিংসকে নিখুঁত বলার সুযোগ নেই। যেই বলে তিনি আউট হয়েছেন সেটাকে অনায়াসে বাউন্ডারি ছাড়া করার কথা ইনফর্ম রিয়াদের। কিন্তু স্লগ সুইপের পজিশনে পুল খেলতে গিয়ে তিনি কি না আউট হলেন হাস্যকর একটা ডেলিভারিতে।
না, আটত্রিশের মাহমুদউল্লাহ একাই ম্যাচ জিতিয়ে দিবেন সেই আশা হয়তো তেমন কেউই করেন না। কিন্তু আরেকটু ভাল বোধহয় করার সুযোগ ছিল তাঁর সামনে; বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে পারতেন তিনি।
যদিও সাত নম্বরে এই ডানহাতির প্রতিদ্বন্দ্বীদের পারফরম্যান্স তাঁর বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনাকে আরো জোরালো করেছে৷ ব্যাটার হিসেবে শেখ মেহেদী এখনো ভরসাযোগ্য হয়ে উঠেননি, আর সৌম্য সরকার তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি এদিন। এছাড়া নুরুল হাসান সোহানও আপাতত বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় নেই।
সাত নম্বরে কাকে খেলাবে বাংলাদেশ – বছরখানেক আগেও এমন প্রশ্নে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামই শোনা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বদলে গিয়েছে চিত্রপট; এপ্রোচ আর ফিটনেস বিবেচনায় তাঁর পরিবর্তে তরুণদের ওপর বেশি ভরসা করতে শুরু করেছিল টিম ম্যানেজম্যান্ট। তবে রিয়াদ প্রমাণ করে দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি, অন্তত বাকিদের চেয়ে এগিয়ে আছেন অনেকটা।
সবমিলিয়ে তাই ভারতের বিমান ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী হতেই পারেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষমুহুর্তে বাকিদের টপকে স্কোয়াডে জায়গা করে নিবেন তিনি; বারবার ব্যাটিং ধ্বসের মুখোমুখি হওয়া বাংলাদেশ দলের সাত নম্বরে তাঁর মত নির্ভরযোগ্য ব্যাটারকেই বেশি প্রয়োজন।