আগাম অবসরপ্রাপ্তদের সেরা একাদশ

ক্রিকেট হল পারফরমিং আর্ট। এই পারফরমিং আর্টের নিয়তিই হল – এখানে লম্বা সময় একই রকমের ফর্ম ধরে রাখা মুশকিল। তাই, অনেকেই ফর্ম বজায় না রাখতে পেরে আগাম বিদায় বলে দেন। আবার এমন ক্রিকেটারও আছেন – যারা ব্যক্তিগত কারণে আগে ভাগে খেলাটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন ফর্ম থাকার পরও। তাঁদের ক্যারিয়ারও তাই লম্বা হয় না।

ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে ক্রিকেটাররা সাধারণত ৩৬ থেকে ৩৮ বছর – এই বয়সের মধ্যে অবসর নেন। কেউ কেউ আবার ৪০ বছর অবধি ক্যারিয়ার টেনে নিয়ে যান। পারফরমও করেন। আবার কেউ কেউ অনেক আগেই বিদায় নিয়ে ফেলেন। এই আগাম বিদায় বলাদের নিয়ে দিব্যি একটা আন্তর্জাতিক মানের একাদশ বানিয়ে ফেলা যায়।

  • অ্যালিস্টেয়ার কুক (ইংল্যান্ড)

বয়স যখন ৩০-এর মত তখন মনে হয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির রেকর্ড সম্ভবত অ্যালিস্টেয়ার কুক ছুঁয়ে ফেলবেন। সেটা আর হয়নি। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক বিদায় বলে ফেলেছেন মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই।

  • গ্রায়েম স্মিথ (দক্ষিণ আফ্রিকা): অধিনায়ক

খুব অল্প বয়সেই অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন গ্রায়েম স্মিথ। অধিনায়কত্ব ও ব্যাটিং – দু’টোতেই অল্প কিছুদিনের মাঝে চলে যান সেরাদের কাতারে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সব ফরম্যাটে এক নম্বর করেন। তবে, ব্যর্থতা মানতে পারেননি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই বিদায় বলেন, বিশ্বকাপ জিততে না পারার আক্ষেপ বাকি প্রোটিয়া গ্রেটদের মত তাঁরও ছিল।

  • মাইকেল ক্লার্ক (অস্ট্রেলিয়া): সহ-অধিনায়ক

অস্ট্রেলিয়ার সোনালী যুগের সারথী তিনি। বিদায় বলেছেন মাত্র ৩৪ বছর বয়সে। যদিও, বিদায় বেলায় আক্ষেপ থাকার কথা নয় তাঁর। কারণ, ২০১৫ সালে বিদায় ঘোষণা দেওয়ার সময় তাঁর হাতে ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা।

  • কেভিন পিটারসেন (ইংল্যান্ড)

ভিন্ন ঘরানার ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেনের ক্যারিয়ারটা ছিল বিতর্কে ঠাঁসা। যে সামর্থ্য ছিল তাতে আরো লম্বা সময় ক্যারিয়ারটা দিব্যি টেনে নিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু, করেননি। অবসর নিয়ে ফেলেছেন মাত্র ৩৪ বছর বয়সে।

  • সুরেশ রায়না (ভারত)

বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকার অবসরের সিদ্ধান্তটা সমর্থকদের জন্য ছিল বিস্ময়কর। প্রিয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বিদায় বলে দেওয়ার দিনই নিজে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন সুরেশ রায়না। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৩।

  • এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা): উইকেটরক্ষক

২০১৮ সালে যখন এবি ডি ভিলিয়ার্স অবসরের ঘোষণা দেন, তখন বয়স ছিল মাত্র ৩৪ বছর। এই সিদ্ধান্তে পুরো পৃথিবী চমকে ওঠে। যদিও, তিনি ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। শোনা গিয়েছিল ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেন। তবে, সেটা আর হচ্ছে না।

  • অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ (ইংল্যান্ড)

বলা হচ্ছিল, ইংল্যান্ড তাঁর নতুন ইয়ান বোথামকে খুঁজে পেয়েছে। অ্যাশেজ জিতিয়ে সেই ভরসারও প্রতিদান দেন অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। তবে, বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ইনজুরি। অবসর নিয়ে ফেলেন ৩৩ বছর বয়সেই। এরপর কখনো বক্সিং রিংয়ে নেমেছেন, কখনো বা টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সঞ্চালক হয়েছেন এই ইংলিশ কিংবদন্তি।

  • মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান)

মাত্র ২৯ বছর বয়সে মোহাম্মদ আমিরের সিদ্ধান্ত গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই হতবাক করেছে। কারণ, তাঁর প্রতিভা নিয়ে কোনো কালেই সংশয় ছিল না। তবে, শোনা যাচ্ছে ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে তিনি আবারো ফিরতে পারেন।

  • গ্রায়েম সোয়ান (ইংল্যান্ড)

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল দেরি করে। যতদিন খেলেছেন, ততদিন সময়ের সেরা অফ স্পিনারদের একজন ছিলেন। অথচ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন মোটে পাঁচ বছর। ৩৪ বছর বয়সেই তিনি অবসরের ঘোষণা দেন।

  • শেন বন্ড (নিউজিল্যান্ড)

ইনজুরির কারণে শেন বন্ডের ক্যারিয়ারটা যেমন হওয়া উচিৎ ছিল – তা আদৌ হয়নি। তবে, কিছু বিতর্কও ছুয়ে গিয়েছিল তাঁকে। খেলতে গিয়েছিলেন নিষিদ্ধ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে (আইসিএল)। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি ক্যারিয়ারের ইতি টানেন।

  • জাভাগাল শ্রীনাথ (ভারত)

নব্বইয়ের দশকে ভারতের পেস কান্ডারি, তখন আজকালকার মত ভারতে এক গাদা পেসার ছিল না। ওই আমলে লম্বা সময় তিনি ভারতকে সার্ভিস দিয়ে গেছেন। যদিও, অবসর নিতে বাধ্য হন মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই। ইনজুরি তাঁর ক্যারিয়ারটাকে আরো বড় করতে দেয়নি।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link