এক যুবকের তাড়াহুড়ো

যা হল – তা তো হওয়ারই ছিল, এতে কোনো বিস্ময় নেই। কিন্তু, এত তারাতারি যে হবে – তা হয়তো কেউ ভাবেনি।

করাচি টেস্টে মাঠে নামার আগে টেস্টে ২০০ উইকেট পেতে ক্যাগিসো রাবাদার প্রয়োজন ছিলো মাত্র ৩ উইকেট। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট শিকার করে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই প্রোটিয়া পেসার। এই অর্জনের পথে রেকর্ডের বেশ কয়েকটা পাতায় নিজের নাম তুলেছেন তিনি।

টেস্টে ২০০ বা এর বেশি উইকেট আছে এমন বোলারদের ভিতর রাবাদার চেয়ে ভালো স্টাইকরেট নেই আর কারো। ৪৪ টেস্টে ২০০ উইকেট নেওয়া রাবাদার স্টাইকরেট ৪১.১০। এর পরের অবস্থানে রয়েছেন তাঁরই স্বদেশি ডেল স্টেইন। ৪৩৯ উইকেট নেওয়া স্টেইনের স্টাইকরেট ৪২.৩।

টেস্টে ম্যাচের হিসাবে দ্রুততম ২০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড পাকিস্তানি স্পিনার ইয়াসির শাহর। মাত্র ৩৩ টেস্টে ২০০ উইকেটে শিকার করেছিলেন ইয়াসির। সেখানে রাবাদার ২০০ উইকেট শিকার করতে লেগেছে ৪৪ ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রাবাদার চেয়ে দ্রুত ২০০ উইকেট পেয়েছেন শুধু ডেল স্টেইন; স্টেইনের লেগেছিলো ৩৯ ম্যাচ।

বলের হিসাবে টেস্টে দ্রুততম ২০০ উইকেট নিয়েছেন ওয়াকার ইউনুস। ২০০ উইকেট নিতে ওয়াকারকে বল করতে হয়েছে ৭৭৩০ টি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডেল স্টেইনকে ২০০ উইকেট নিতে বল করতে হয়েছে ৭৮৪৮ টি। আর রাবাদা ২০০ উইকেট পেয়েছেন ৮১৫৪ টি বল করে।

রাবাদা ২৫ বছর ২৪৮ দিন বয়সে টেস্টে ২০০ উইকেট শিকার করেছেন। রাবাদার থেকে কম বয়সে টেস্টে ২০০ উইকেট পেয়েছেন কেবল তিন জন। পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনুস পেয়েছে ২৪ বছর ২৮ দিন বয়সে, বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় অধিনায়ক কপিল দেব পেয়েছেন ২৪ বছর ৭০ দিন বয়সে এবং ২৫ বছর ৭৮ দিন বয়সে ২০০ উইকেট পেয়েছিলেন ভারতের হরভজন সিং।

এমন রেকর্ড গড়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত রাবাদা। তিনি বলেন, ‘আপনি যখন খেলা শুরু করেন তখন কখনোই ভাববেন না যে এরকম তালিকায় থাকবেন এবং এমন পরিসংখ্যান থাকবে। আপনি শুধু আপনার সেরাটাই করতে পারবেন। সুতরাং আমি সত্যিই আনন্দিত এবং সন্তুষ্ট।’

রাবাদার টেস্ট ক্যারিয়ারে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তিনি ধারাবাহিক ভাবে ভালো করেছেন। ৪৪ টেস্টের ভিতর মাত্র একটি টেস্টে কোন উইকেট পাননি এই পেসার। আর ৪৪ টেস্টের ৭৯ ইনিংসের মাত্র ৮ ইনিংসে ছিলেন উইকেট শূন্য। টেস্টে ৯ বার পাঁচ উইকেট এবং ৪ বার নিয়েছিলেন ১০ উইকেট। রাবাদা জানিয়েছেন এমন সাফল্যে পেয়েছেন কঠোর পরিশ্রমের কারণেই।

রাবাদা বলেন, ‘আমি মনে করি এটি কঠোর পরিশ্রম ও অনেক সময় দেওয়ার ফল। কোথায় আরো উন্নতি হতে পারে তা দেখে বিশ্লেষণ করে চিন্তাভাবনা করেছি। এটি সহজ ছিলো না। নিজকে এমন নিখুঁত করার চেস্টা করেছি যা সহজ মনে হতে পারে। এই কাজ ঘন্টার পর ঘন্টা অবিরাম করে যাওয়া, এবং আরো কতটা কতটা উন্নতি হতে পারে তা দেখার চেষ্টা করেছি।’

রাবাদার থেকে এগিয়ে থাকা ওয়াকার ইউনুস এখন পাকিস্তানের বোলিং কোচ। তাঁরা দু’জনই একই মাঠে রয়েছেন। রাবাদা জানিয়েছেন সব শেষে কথা বলবেন ওয়াকারের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তিনি দুর্দান্ত বোলার ছিলেন। আমি যখন আরো কিছু শিখতে চাই তখন আমার অবসর সময়ে অনেক বোলারের বল দেখি। সব কিছু শেষে আমি তাঁর সাথে কথা বলবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link