বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সেরা দুই রান সংগ্রাহক সিলেট দলে। দলটার অন্যতম ভরসা তাঁদের দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। তবে আজ লো স্কোরিং ম্যাচে কেউই হাল ধরতে পারলেন না। দলীয় মাত্র দশ রানেই দুজনের বিদায় হয়েছে। মিরপুরের মন্থর উইকেটে হালটা আজ ধরলেন জাকির হাসান।
আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনা টাইগার্স খেলেছে পুরো ২০ ওভার। রান করতে পেরেছে মাত্র ১১৩। ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা যে কঠিন তা বোঝাই যাচ্ছিল। তবুও ১১৪ রানের টার্গেট সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য বড় বাঁধা হওয়ার কথা নয়। টুর্নামেন্টের সফলতম দল তাঁরা। আছে পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বরে।
এছাড়া দলটার লোকাল ব্যাটার প্রায় সবাই আছে দুরন্ত ফর্মে। তাঁদের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ওপেনিং জুটি। শান্ত আর হ্রদয় প্রায় প্রতিম্যাচেই ম্যাচ শেষ করে আসেন। তবে খুলনা শুরুতেই প্যাভিলিয়নে পাঠালো এই দুজনকে। তৌহিদ হৃদয় আজ ফিরে গিয়েছেন ৫ রান করে। আর শান্ত করতে পেরেছেন মাত্র ৩ রান।
ফলে দারুণ একটা লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। খুলনাও বুঝি টুর্নামেন্টের সেরা দলের সাথে জয়ের একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। তবে খুলনার সেই স্বপ্ন ধীরে ধীরে কেড়ে নিতে থাকেন জাকির। ব্যাট হাতে তিনি এগোতে থাকলেন উইকেটের সাথে তাল মিলিয়ে।
ম্যাচের পরিস্থিতিতে যতটুকু দরকার ছিল, উইকেট থেকে যতটুকু সাহায্য পাওয়া যাচ্ছিল তা নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকলেন। সাথে পেলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে। দুজনে মিলে ধীরে ধীরে ছিনিয়ে নিতে শুরু করলেন জয়।
মুশফিক ও জাকির দুজনে ৮০ বল থেকে যোগ করলেন ৯০ রান। আর জাকির ৪৬ বলে খেললেন ৫০ রানের ইনিংস। ব্যাটিং করেছেন ১১০ এর কাছাকাছি স্ট্রাইকরে টে। খুব আহামরি কিছু নয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। তবুও মিরপুরের উইকেটে এই টিকে থাকার ইনিংস গুলোই কতটা প্রয়োজন হয়ে ওঠে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সাথে একটা স্টেটমেন্টও বটে, যেটা বলে যে পরিস্থিতি বুঝে টি-টোয়েন্টিতেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে জানেন তিনি।
জাকির টিকে থাকার কাজটা করেছেন দৃঢ় ভাবেই। তাঁর এই ইনিংসের দলের জয় নিশ্চিত হয়েছে। খুলনার জন্য হয়তো এই ম্যাচ খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কেননা ইতোমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে তাঁরা। তবে সিলেটের জন্য এই জয়টা জরুরী ছিল। খুলনাকে হারিয়ে টেবিলের সেরা দুই নিশ্চিত হয়েছে সিলেটের।
ফলে প্লে অফে তাঁদের জন্য রাস্তাটা সহজ হয়েছে। আর এই কাজটা করে দিয়েছেন জাকির হাসান। সাথে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এই ব্যাটার করেছেন ৩৫ বল থেকে ৩৯ রান।
৫০ রান করে জাকির যখন ফিরে গিয়েছে তখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে সিলেটের জন্য। তাঁর এই দায়িত্বশীল ইনিংসে ছয় উইকেটের সহজ ছয় পেয়েছে সিলেট। ১১৪ রানের টার্গেট পারি দিয়েছে ১৫ বল হাতে রেখেই। তাইতো জাকিরকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারে সিলেট স্ট্রাইকার্স।