ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর তৃতীয় ম্যাচে এসে রানের দেখা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কুশাল পেরেরা। অধিনায়কের সেঞ্চুরিতে ভর করে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ২৮৭ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
তবে কুশাল পেরেরার সেঞ্চুরি করার পিছনে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের অবদানই বেশি। এই ইনিংস খেলার পথে তিন বার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতার দিনে সফল ছিলেন তাসকিন আহমেদ। লাইন, লেংথ ও গতির পসরা সাজিয়ে চার উইকেট শিকার করেন এই পেসার।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার কুশাল পেরেরা ও
দানুশকা গুনাথিলাকা। ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করা এই দুই ব্যাটসম্যানকে আটকানোর কোন পথই পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। দুজনই রান তুলতে থাকেন সমান গতিতে। ৬৮ বলে ৮২ রানের জুটি গড়েন দুজন।
দুই জন দ্রুত গতিতে রান তুললেও লাইন এবং লেংথ দিয়ে এই দুই ওপেনারকে অনেক বারই সমস্যয় ফেলেছেন তাসকিন আহমেদ। এই পেসার সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখায় প্রথম সাফল্য আসে তার হাত ধরেই। অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ইন সাইড হয়ে ফিরে যান গুনাথিলাকা। ৩৩ বলে ৩৯ করেন তিনি।
প্রথম উইকেট পরার পর দ্বিতীয় সাফল্য পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। ঐ ওভারের শেষ বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন পাথুম নিসাঙ্কা। তাসকিনের করা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল কাট করতে গিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান তিনি। ৮২ রানে দুই উইকেট হারানোর পর আবার প্রতিরোধ গড়ে শ্রীলঙ্কা।
তৃতীয় উইকেটে কুশাল মেন্ডিসকে নিয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন পেরেরা। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙতে আবার তাসকিনকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক। আস্থার প্রতিদান দিয়ে নতুন স্পেলের শুরুতেই মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন এই পেসার। তাসকিনের করা অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে তামিমের হাতে ধরা পড়েন ৩৬ বলে ২২ রান করা মেন্ডিস।
তবে এই জুটি অনেক আগেই ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সাকিবের বলে দুই বার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান পেরেরা। ক্যাচ নিতে পারেননি আফিফ হোসেন। এরপর ৯৯ রানে মুস্তাফিজের স্লোয়ারে ক্যাচ দিয়ে আবার বেঁচে যান পেরেরা। এবার ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জীবন পেয়ে পরের বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক।
তবে সেঞ্চুরি করার পর আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি পেরেরা। তিন বার জীবন পেয়ে শরিফুল ইসলামের লেংথ বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে সেই মাহমুদউল্লাহর কাছেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ১২২ বলে ১১ টি চার ও ১ টি ছয়ের সাহায্যে ১২০ রান করেন তিনি। এরপর শরিফুলের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়েন নিরোশান ডিকওয়েলা।
এরপর ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ৫৫ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বোলারদের ভিতর সবচেয়ে সফল ছিলেন তাসকিন আহমেদ। ৯ ওভার বল করে ৪৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। এছাড়া শরিফুল ইসলাম পেয়েছেন ১ উইকেট।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর: (প্রথম ইনিংস শেষে)
শ্রীলঙ্কা: ২৮৬/৬ (ওভার: ৫০; গুনাথিলাকা- ৩৯, পেরেরা- ১২০, নিসাঙ্কা- ০, মেন্ডিস- ২২, সিলভা- ১০, ডিকওয়েলা- ৫৫, হাসারাঙ্গা- ১৮, মেন্ডিস- ৮) (তাসকিন- ৯-০-৪৬-৪, শরিফুল- ৮-০-৫৬-১)