বাংলাদেশ না পারলেও পেরেছেন শরিফুল ইসলাম। সদ্য শেষ হওয়া সিরিজে সম্ভবত সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি শরিফুলের ফর্ম। সিরিজের শেষ ম্যাচেও তিনি নিয়েছেন ৪.৬৩ ইকনোমিতে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট। তার এই কিপটে বোলিংয়ে ম্যাচটাই তো জমিয়েই তুলেছিল বাংলাদেশ।
সিরিজে নিয়েছেন ৬ উইকেট। এত ভালো পারফরম্যান্সের জন্য পেয়েছেন সিরিজ সেরার পুরস্কারও। সত্যি বলতে শরিফুলের ২০২৩ সালটা কেটেছে বেশ। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে নিয়েছেন ২৮ ম্যাচে ৫২ উইকেট।
তিন ফরম্যাটেই সমান ভাবে পারফর্ম করে গিয়ে নজরে এসেছেন আরও। ওয়ানডেতে ১৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৩২ উইকেট, টি টোয়েন্টিতে ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট আর টেস্টে ৪ ম্যাচে ১২ উইকেট।
উইকেট সংখ্যার পাশাপাশি তাঁর ইকনোমি আর বোলিং গড় ছিল চোখ ধাঁধানো। এই যেমন টেস্টে বোলিং গড় মাত্র ১৭। লাল বলে বাংলাদেশের কোনো বোলার প্রতি ১৭ রানে একটি করে উইকেট নিয়েছেন এটা যেন স্বপ্নের মতোই।
ওয়ানডেতে তো বছরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকাতেই ছিলেন। তালিকার দশ নাম্বারে থাকা শরিফুলের সাড়ে পাঁচ ইকনোমি ছিল সমীহ জাগানিয়া। টি টোয়েন্টিতে ইকনোমি সাতের ঘরে থাকলেও গড় মাত্র ১৪, যেটা ঈর্ষণীয়।
এরকম দারুণ একটা বছর কাটাবার পরেও বড় আক্ষেপ বিশ্বকাপ। সবার অনেক আশা ছিল বাংলাদেশের পেস ইউনিট দারুণ করবে এ আসরে। কিন্তু সেটা আর হলো কই! বাকি সব পেসারদের মতো শরিফুলের অবস্থাও ছিল হতশ্রী। ১০ উইকেট পেলেও ৬. ৩২ ইকনোমি পুরো বছরের সাফল্যকেই ম্লান করে দিয়েছে যেন!
শরিফুল সহ বাকিদের বেহাল দশার কারণে বাংলাদেশও ভুগেছে বিশ্বকাপে। জিততে পেরেছে মাত্র দুই ম্যাচ, হেরেছে এমনকি নেদারল্যান্ডের সাথেও। পেসারদের উদার হস্তে রান দেওয়ার খেসারত দিতে হয়েছে বেশিরভাগ ম্যাচেই।
তাঁর দারুণ বোলিংয়ের পরেও আবার অনেক ম্যাচ বাংলাদেশ জিততে পারেনি। এই যেমন শেষ ম্যাচটার কথাই চিন্তা করুন। ব্যাটাররা আরেকটু ভালো করতেই পারতেন। কে জানে তখন শরিফুল হয়তো থাকতেন হাস্যোজ্জল জয়ী একটা দলে। ব্যাটারদের ব্যর্থতা, বাকি বোলারদের সমর্থন না পাওয়া বা বাজে ফিল্ডিং-শরিফুলের বিপক্ষে গেছে বারবার।
শরিফুল আসলে দুর্ভাগা। দুর্ভাগা বাংলাদেশও। তাই তো পাওয়া সুযোগ বারবার হারিয়ে ফেলে হতাশায় নিমজ্জিত হয় সবাই। কবে এই দুর্ভাগ্যের চক্র থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ এখন তাই দেখার বিষয়।