‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ (এমপি)- সাকিব আল হাসানের নামের সাথে যুক্ত হওয়া নতুন তকমা। এর আগেও তো কতশত তকমা জুড়েছে সাকিবের নামের পাশে। নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার, পোস্টার বয় থেকে শুরু করে আরও কত ইতিবাচক ট্যাগ। পাশাপাশি নেতিবাচকভাবেই ব্যবহৃত হয়েছে নানান শব্দ। সেসবের পেছনে কারণ ছিল নানামুখী বিতর্ক।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আদ্যোপান্ত বহু ধরণের বিতর্কের সাথে জড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। কখনো বেটিং সাইটের সাথে সম্পৃক্ততা, কখনো আবার আম্পায়ারদের সাথে অসদাচরণ। আবার কখনো অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। সেসব কিছু নিয়েও হয়েছে বিস্তর সমালোচনা।
তবে সেসব সীমিত ছিল ক্রিকেটের গণ্ডি অবধি। কিন্তু সাকিবের পরিধি এবার আরও যে হয়েছে বেশ বড়। সাকিব এখন একটি অঞ্চলের প্রতিনিধি। তিনি এখন বাংলাদেশের রাজনীতির এক অংশ। চুন থেকে পান খসলেই তা বৃহদাকার হতে সময় নেবে খুব সামান্যই।
এই যেমন নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন সময়ে এক ভক্তকে চড় মেরে বসেন সাকিব। সেই ভিডিও চিত্র মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় নির্বাচনের দিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়েই তা নিয়ে হয়েছে বিস্তর সমালোচনা। তবে অদূর ভবিষতে সে সমালোচনা স্রেফ দেশের মধ্যেই থাকবে সীমাবদ্ধ তেমনটিও নয়।
এমনকি চড়-কাণ্ডও ভারতীয় মূল ধারার গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই অবশ্য সাকিবের আরও খানিকটা সংযত হওয়ার দায়িত্ব বেড়ে যায়। জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর তাকে যে হতে হবে আরও বেশি সংযত। তাকে সামলাতে হবে অদ্ভুত সব পরিস্থিতি। ঠান্ডা মাথায় সেসব সামাল না দিতে পারলে তাকে নিয়ে সমালোচনা হবে নানা মহলে।
তাতে করে ব্র্যান্ড সাকিবের অবক্ষয় ঘটতে পারে নানাভাবে। তাছাড়া প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে তার জনপ্রতিনিধি হওয়ার সক্ষমতাকে। দলীয় শৃঙ্খলার ভঙ্গের দায়ে তাকে শাস্তির মুখোমুখিও তখন হতে হবে তাকে। তাছাড়া মহান জাতীয় সংসদেও সাকিবের ছোট্ট ঘটনা ফলাও করে আলোচনার খোরাক জোগাতে পারে। সর্বোপরী এসবকিছু সাকিবের উপর থেকে মানুষের আস্থা কেড়ে নিতে পারে।
তাইতো সেই কৈশরের সাকিবকে ঝেড়ে ফেলতে হবে নিজের রাগ। তাকে হতে হবে সত্যিকার অর্থেই বিনয়ী। শীতল মস্তিষ্কের চর্চা করতে হবে। প্রতিকূলতা সামলাতে হবে। প্রতিপক্ষও যে তার দূর্বলতাগুলোর ফায়দা তুলতে চাইবে না, সেটা হতেই পারে না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রতিহিংসা বিশাল এক জায়গা দখল করে আছে।
আর সেই প্রতিহিংসার বলি যে সাকিব হবেন না সে নিশ্চয়তাও তো নেই। সাকিব বেশ ধূর্ত। তবে তাকে হতে হবে আরও খানিকটা স্থির। তবেই না খেলোয়াড় সাকিব হয়ে উঠবেন সত্যিকারের রাজনীতিবিদ।