ওভারের ৬ টা বলই সীমানার ওপারে! ক্রিকেট ইতিহাসে এমন তাণ্ডবের সংখ্যা নগণ্যই বটে। তবে ২০২৪-এ এসে ছয় বলে ছক্কার কীর্তি গড়লেন ভারতীয় এক ব্যাটার। ভারতের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা কর্নেল সিকে নাইডু ট্রফিতে বুধবার রেলওয়ের স্পিনার দামানদীপ সিংয়ের ওভারের সব বলেই ছক্কা মেরেছেন অন্ধ্র প্রদেশের ভামশি কৃষ্ণা।
সিকে নাইডু ট্রফি মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্ট, যেটিকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হিসেবেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ ছয় ছক্কার কীর্তিতে ভামশি কৃষ্ণা নাম লিখিয়েছেন গ্যারি সোবার্স, রবি শাস্ত্রীদের মতো কিংবদন্তির পাশে। এমনিতে চতুর্থ ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে তিনি এ কীর্তি গড়লেন। ভামশির আগে এই কীর্তি ছিল রবি শাস্ত্রী, যুবরাজ সিং ও রুতুরাজ গায়কড়ের।
কাডাপায় এ দিন শুধু ৬ বলে ৬ ছক্কায় মারেননি ভামশি, একই সাথে খেলেছেন ৬৪ বলে ১১০ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংসও। ভামশি এ ছয় ছক্কার চক্র শুরু করেছিলেন স্লগসুইপে মিডউইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে। তখনও বোলার দামানদীপ সিংয়ের মনে হয়নি, তাঁর জন্য ওই ওভারে কী অপেক্ষা করছে। কী মনে করে তাই পরের বলটি তাই স্ট্যাম্পের খানিকটা বাইরেই দিয়েছিলেন। ফলাফল, এবার লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা।
ভামশি এরপর ডিপ ফাইন লেগে ছক্কা হাঁকিয়েছেন, সুইপ শটে সীমানা পার করেছেন। এবং টানা পাঁচ ছয়ের পর তিনি ৬ নম্বর বলটাও ডিপ স্কোয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে তুলে নেন বাউন্ডারি। কার্যত, দামান সিংয়ের দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না ভামশির ব্যাটিং তাণ্ডবে। আর এতেই ইতিহাসের পাতায় নাম উঠে যায় তাঁর।
১৯৮৫ সালে প্রথম ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে রবি শাস্ত্রী ৬ বলে ৬ ছক্কা মেরেছিলেন রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে। এর ২২ বছর পর যুবরাজ মেরেছিলেন ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। আর ২০২২ সালে তৃতীয় ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে রুতুরাজ গায়কোয়াড় এই কীর্তি গড়েন বিজয় হাজারে ট্রফির ম্যাচে। এই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন ভামশি কৃষ্ণাও।
এমনিতে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ৬ বলে ৬ ছক্কা মারার কীর্তিটা গ্যারি সোবার্সের। ১৯৬৮ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে গ্ল্যামরগনের ম্যালকম ন্যাশের ওভারের সব কটি বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন নটিংহামশায়ারের হয়ে খেলা ক্যারিবীয় এ কিংবদন্তি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অবশ্য এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছিল বেশ কিছু বছর পর। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের লেগ স্পিনার ড্যান ফন বাঞ্জির এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস।