প্রায় মাস দেড়েকের ক্রিকেট যুদ্ধ শেষে শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলেছে ফরচুন বরিশাল। পুরো টু্র্নামেন্ট জুড়েই দলগুলোর মাঝে লড়াই চলেছে সমান তালে; ক্রিকেটাররাও নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিয়েছেন দলের জন্য। তবে কেউ কেউ চেষ্টা করেও পারেননি পারফর্ম করতে; সামর্থ্যের ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেননি বিপিএলের এই আসরে।
প্রত্যাশার বিপরীতে হতাশ করা এসব ক্রিকেটারদের নিয়েই খেলা-৭১ তৈরি করেছে বিপিএল-২০২৪ এর ফ্লপ একাদশ।
- নাজমুল হোসেন শান্ত – সিলেট স্ট্রাইকার্স
২০২৩ সাল থেকে দারুণ ছন্দে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবারের বিপিএলে তাই তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, কিন্তু আগের বারের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবার নিদারুণ হতাশা উপহার দিয়েছেন। তাঁর ব্যাটে আসেনি একটা ফিফটিও, সবমিলিয়ে করেছেন মোটে ১৭৫ রান।
- ব্রেন্ডন কিং – রংপুর রাইডার্স
অনেক আশা নিয়ে ব্রেন্ডন কিং-কে দলে নিয়েছিল রংপুর রাইডার্স। কিন্তু আশার বেলুন রীতিমতো চুপসে দিয়েছেন তিনি। একের পর এক ম্যাচে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তাঁকে, অথচ প্রায় প্রতিবারই রান উপহার দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাঁর ব্যাট।
- সায়িম আইয়ুব – দুর্দান্ত ঢাকা
পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে সায়িম আইয়ুবের পারফরম্যান্স ছিল একেবারে ম্লান। ঢাকার দুর্বল ব্যাটিং লাইন আপের কারণে তাঁর উপর দায়িত্ব ছিল একটু বেশি, কিন্তু কোন ম্যাচেই সেই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।
- জাকির হাসান – সিলেট স্ট্রাইকার্স
বিপিএলের প্রথম দিকেই ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জাকির হাসান। কিন্তু সময় গড়াতেই ছন্দ হারিয়ে বসেছিলেন তিনি; তাই তো ফ্লপ ক্রিকেটারদের কাল্পনিক এই একাদশের উইকেট কিপিংয়ের দায়িত্ব সামলাতে হবে তাঁকে।
- জনসন চার্লস – কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
আগের মৌসুমের ফাইনালে একা হাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন জনসন চার্লস। তবে এবার সেটার পুনরাবৃত্তি হয়নি, উল্টো আসর জুড়ে ব্যর্থতার গল্প লিখেছেন তিনি। এক ইনিংসও বিশ রানের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি এই উইন্ডিজ তারকা।
- মোসাদ্দেক হোসেন – দুর্দান্ত ঢাকা
ঢাকার অধিনায়ক হিসেবেই বিপিএলে শুরুটা করেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। কিন্তু পারফরম্যান্স এতটাই তলানিতে ঠেকেছিল যে বাধ্য হয়ে তাঁকে অধিনায়কত্ব থেকে সরাতে হয়। ব্যাটিং কিংবা বোলিং দুই বিভাগেই সুপার ফ্লপ ছিলেন তিনি।
- শুভাগত হোম – চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
মোসাদ্দেকের মতই টুর্নামেন্ট কেটেছে শুভাগত হোমের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক ছিলেন বটে কিন্তু পারফর্ম করে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তাঁর উপস্থিতি ছিল না। দুই একটি ম্যাচের বিচ্ছিন্ন পারফরম্যান্স বাদ দিলে এই ডানহাতি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সমর্থকদের।
- নাসুম আহমেদ – খুলনা টাইগার্স
জাতীয় দলের আশেপাশে আছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ, অথচ এবারের বিপিএলে তাঁর মাঝে ছিল না ভাল করার তাড়না। প্রায় প্রতি ম্যাচে খরুচে বোলিং করেছেন, উইকেট শিকারের ক্ষেত্রেও কার্যকারিতা ছিল না তাঁর।
- মাশরাফি মর্তুজা – সিলেট স্ট্রাইকার্স (অধিনায়ক)
বয়সের বাঁধা অতিক্রম করে মাশরাফি মর্তুজা মাঠে নেমেছিলেন ঠিকই, কিন্তু বাইশ গজে বলার মত কিছু করতে পারেননি। পাঁচ ম্যাচ খেলে মোটে এক উইকেট পেয়েছেন তিনি, সব ম্যাচে ঠিকঠাক বোলিংও করেননি।
- রুবেল হোসেন – খুলনা টাইগার্স
অভিজ্ঞ পেসার, সেই সাথে বিপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা; রুবেল হোসেনের দিকে তাই বাড়তি নজর ছিল সবার। কিন্তু টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ম্যাচেই ক্যাচ মিস আর বাজে বোলিংয়ে সরাসরি দলের পরাজয়ের কারণ হন তিনি। সেখান থেকে পরে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে।
- হাসান মাহমুদ – রংপুর রাইডার্স
অফ ফর্মের জন্য জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন হাসান মাহমুদ। বিপিএলেও সেই ধারা বজায় রেখেছিলেন তিনি। ১৩ উইকেট পেলেও তাঁর বোলিংয়ে ছিল না আগের সেই তীক্ষ্ণতা, নিয়ন্ত্রিত লাইন লেন্থ।