অপেক্ষা ছিল কেবল দু’টি উইকেটের – সেই লক্ষ্যটা নিয়েই ধর্মশালায় খেলতে নেমেছিলেন জেমস মাইকেল অ্যান্ডারসন। দ্বিতীয় দিন শুভমান গিল ও তৃতীয় দিন কুলদীপ যাদবকে ফিরিয়ে দিয়ে তিনি পৌঁছে গেলেন লক্ষ্যমাত্রায়। টেস্ট ইতিহাসে তাঁর আগে কোনো ফাস্ট বোলারই ৭০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেননি।
এই ভদ্রলোকের বয়স এখন ৪১ হয়ে গিয়ে ৪২-এর পথে হাঁটছে। ভারত কিংবা ইংল্যান্ড – দু’দলের স্কোয়াডেই এমন একাধিক ক্রিকেটার আছেন যাদের জন্মই কি না অ্যান্ডারসনের অভিষেকের পর। এই বয়সে লোকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেন পাড়ার ক্রিকেট খেলতেও ভাববে। কেউ থিতু হন কোচিংয়ে, কেউ বা ধারাভাষ্যে।
কিন্তু, অ্যান্ডারসন যেন চিরতরুণ। হাঁটুর বয়সী শুভমান গিলদের তিনি রীতিমত ‘বানি’ বানিয়ে ফেলতে জানেন। বয়স তাঁর জন্য স্রেফ একটা সংখ্যা। আজো টেস্ট খেলে চলেছেন। প্রতিটা মুহূর্ত নিজেকে উজাড় করে দিয়ে যান মাঠে। সত্যিই ক্রিকেটের ইতিহাসে জেমস অ্যান্ডারসন একটা রহস্যের নাম। তাঁকে দেখতে পারব, তার রেকর্ড বা কীর্তি দেখে উপভোগ করতে পারব – কিন্তু তাঁকে বোঝার সাধ্য আছে ক’জনার।
অভিষেক টেস্ট কিংবা ওয়ানডে – দু’টো অভিষেকেই দু’দলের একাদশে যারা ছিলেন তাঁরা কেউ-ই এখন আর মাঠের ক্রিকেটটা খেলেন না – আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো দূরের কথা। শেন ওয়ার্ন কিংবা হিথ স্ট্রিকরা তো চলে গেছেন জীবন নদীর ওপারে।
টিকে আছেন কেবল ওই একজনই – জেমস অ্যান্ডারসন। শুধু টিকে থাকাই নয় – তিনি খেলছেন রীতিমত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সেটাও আবার ক্রিকেটেরই সবচেয়ে অভিজাত ফরম্যাটে। আর কেবলই কি খেলা – অ্যান্ডারসন তো রীতিমত পৌঁছে গেলেন সপ্তম আকাশে। সাদা পোশাকে যেখানে এর আগে পৌঁছাতে পেরেছেন কেবল মাত্র দু’জন।
৮০০ টি উইকেট নিয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন মুত্তিয়া মুরালিধরণ। ৭০৮ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন। এর পরের অবস্থানটাই অ্যান্ডারসনের। অ্যান্ডারসন নিশ্চিতই ২০০ টি টেস্ট খেলার লক্ষ্য নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন – সেটা হলে অন্তত শেন ওয়ার্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা তাঁর।
আর ‘বুড়োদের দিয়ে ফাস্ট বোলিং হয় না’ – এই আপ্তবাক্যকে তিনি ভুল প্রমাণ করে নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন তো কবেই। এবার কেবলই অমরত্ব ছুঁয়ে দেখার পালা।