মাঠের বাইরের খেলায় কঠিন এক চাল দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও হুট করে অবসর ভেঙে জাতীয় দলে ফেরেন তিনি, তখনি বোঝা গিয়েছিল কোন একটা রহস্য নিশ্চয়ই আছে। পরবর্তীতে জানা যায় শৃঙ্খলাজনিত কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে এবং নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কাটাতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সাদা পোশাকের স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল তাঁর নাম।
এটিকে আপনি গেম অ্যাওয়ারনেস বলতে পারেন, স্মার্ট সিদ্ধান্ত হিসেবেও দেখতে পারেন। শ্রীলঙ্কান সমর্থকদের দৃষ্টিতে দেখলে তো বাহবা দিতে ইচ্ছে করবে বুদ্ধিদাতাকে। কারণ বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে না থাকলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিষেধাজ্ঞার মাশুল দিতে হতো হাসারাঙ্গাকে। কিন্তু নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখলে তাঁর এই কাজ পুরোপুরি নীতিবিরুদ্ধ এবং অনৈতিকও।
সাধারণ ম্যাচের পরপরই শৃঙ্খলাজনিত বিষয়ে শুনানি হয়ে থাকে, ফলে ক্রিকেটাররা আন্দাজ করতে পারেন কি ধরনের শাস্তি আসতে যাচ্ছে। অর্থাৎ লঙ্কান লেগ স্পিনারও বুঝতে পেরেছিলেন অন্তত দুইটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন তিনি। আর সেটার প্রভাব যেন বিশ্বকাপে না পড়ে তা নিশ্চিত করতেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁকে সাদা পোশাকের দলে নেয়া হয়।
নিষেধাজ্ঞার পূর্বাভাস পেয়ে সেটার অপব্যবহার করাটা যেকোনো অভিধান অনুযায়ী আনস্পোর্টসম্যানশিপ এর উদাহরণ। এমনটা না করলে ২০২৪ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা হতো না তাঁর। কিন্তু এখন সব বাঁধা টপকে গেলেন তিনি।
অনেক ক্রিকেট বোদ্ধা অবাক হয়েছেন শ্রীলঙ্কার এমন হীন কৌশল দেখে। আবার কেউ কেউ অবাক হয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কোন সতর্কবার্তা না দেয়াতে। নিষেধাজ্ঞার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা কাউকে এভাবে অবসর ভেঙে দলে ডাকা নিঃসন্দেহে নৈতিকতার বহির্ভূত কাজ।
বিশ্বকাপে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা খেললেই শ্রীলঙ্কা জিতে যাবে, এমনটা মোটেই নয়। তবে হ্যাঁ দলটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি, তাই তো যেকোনো ভাবে তাঁর সর্বোচ্চ সেবা পেতে মরিয়া টিম ম্যানেজম্যান্ট। যদিও এই মরিয়া হয়ে ওঠার কারণে নৈতিকতার প্রশ্নে তাঁরা আপস করেছে কি না সেটি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হতে পারে।