সমালোচনা, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ – চারপাশে তাকিয়ে রিয়ান পরাগ এসবই দেখেছেন এতদিন। দিনের পর দিন তাঁকে নিয়ে হাসাহাসিতে মেতেছিল পুরো ক্রিকেটাঙ্গন। ব্যতিক্রম ছিল শুধু রাজস্থান রয়্যালস, টানা ব্যর্থতার পরেও তাঁর কাঁধে ভরসার হাত রেখেছিল তাঁরা। সেটার প্রতিদান এবার দিতে শুরু করেছেন তিনি, দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে খেলেছেন অনবদ্য এক ইনিংস।
চার নম্বরে নেমে এই তরুণ করেছেন ৪৫ বলে ৮৪ রান। সাত চারের পাশাপাশি ছয়টি ছক্কার সাহায্যে এই ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি, সেই সাথে পুরো বিশ ওভার উইকেটে থেকে দলকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। তাঁর পারফরম্যান্সে ভর করেই এদিন ১৮৫ রানের পুঁজি পেয়েছে সাঞ্জু স্যামসন বাহিনী।
এই ডানহাতি যখন ক্রিজে আসেন তখন অধিনায়কের উইকেট হারিয়ে খানিকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল রাজস্থান। ঠিক তখনি জস বাটলারের পতন ঘটলে বিপর্যয় আরো ঘনীভূত হয়। তবে তীব্র চাপের মুখেও তিনি ভেঙে পড়েননি, রবিচন্দন অশ্বিনকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৫৪ রানের জুটি।
অশ্বিনের বিদায়ের পর আরো ক্ষুরধার হয়ে উঠেন পরাগ। একটা পর্যায়ে তাঁর রান ছিল ২৫ বলে ২৫, পরের নয় বলেই ২৫ রান তুলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন তিনি। বাকিটা সময়ও একইভাবে তান্ডব চালিয়ে গিয়েছেন, ফিফটি করার পর শেষ ১১ বলে করেছেন ৩৪ রান। বিশতম ওভারে আনরিখ নর্কিয়াকে যেভাবে শাসন করেছেন এই ব্যাটার সেটা অনেকদিন মনে রাখবেন প্রোটিয়া পেসার।
এর আগে লক্ষ্মৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষেও পারফরম করেছিলেন তিনি। অধিনায়ক স্যামসনের সঙ্গে গড়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ৯৩ রানের জুটি, আর তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৩ রানের ক্যামিও।
লম্বা একটা সময় লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলার পর এই মৌসুমে উপরের দিকে খেলার সুযোগ পেলেন এই উদীয়মান তারকা। টিম ম্যানেজম্যান্টের এই সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছে সবকিছু, পুরোদস্তুর পারফরমার বনে গিয়েছেন তিনি। এবার কেবল সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।
অবশ্য সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় কই। গত কয়েক আসর ধরেই নি:শর্তভাবে তাঁর উপর বিনিয়োগ করেছে রয়্যালস পরিবার। এখন সময় এসেছে প্রতিদান দেয়ার, রিয়ান পরাগ যেকোনো মূল্যে তাই করতে চাইবেন নিশ্চয়ই।