ক্রিকেট হলো পরিসংখ্যানের খেলা। প্রতি মুহূর্তেই তৈরি হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। সব রেকর্ড ক্রিকেট-মোদীদের কাছে মনে না থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু রেকর্ড আছে যেসব সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে থাকে।
আধুনিক ক্রিকেটে দলীয় সংগ্রহ ৩৫০ রানের বেশি হয়ে গেলে সমর্থকরা চোখ বন্ধ করে ধরে নেই দল জিতে যাবে। কিন্তু এর কিছু ব্যতিক্রম ঘটনা আছে যা, ক্রিকেট-মোদীদের মনে গেঁথে থাকবে বা আছে। ৩৫০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের খুব বেশি রেকর্ড দেখা যায় না ক্রিকেটে। কিন্তু কিছু ম্যাচে এই অসম্ভবকে জয় করে ফেলেছে কিছু দল।
- দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া (৪৩৮/৯)
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেন রিকি পন্টিং। তার সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করতে সময় নেননি দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান সাইমন ক্যাটিচ এবং অ্যাডাম গ্রিলক্রিস্ট।গড়ে তোলেন ৯৭ রানের জুটি।৪৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। এরপর পন্টিং এবং ক্যাটিচ গড়ে তোলেন ১১৭ রানের জুটি।৯০ বলে ৭৯ রানে আউট হন তিনি। এরপর পন্টিং এবং মাইকেল হাসির ব্যাটিং ঝড়ে সহজেই ৪৩৪ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।
তাড়া করতে নেমে প্রথমেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ব্যাটিং করতে নেমে ১৮৭ রানের জুটি গড়ে ভালোই শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর পর কয়েকটি উইকেট হারিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।মার্ক বাউচারের ব্যাটে ভর করে অতি কষ্টে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া (৩৬২/১)
টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক জর্জ বেইলি।ব্যাটিং এ নেমেই উইকেটে ঝড় তোলেন অ্যারন ফিঞ্চ এবং ফিলিপ হিউজ। ফিঞ্চ আউট হবার পরও উইকেটে ঝড় থামাননি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান।ওয়াটসন,বেইলি এবং ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং ঝড়ে ৩৫৯ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।
পাহাড়সম রান তাড়া করতে নেমে ১৭৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে তোলেন শিখর ধাওয়ান এবং রোহিত শর্মা। মাত্র ২৬ ওভারে ১৭৬ রানের এই জুটি গড়েন তাঁরা।ধাওয়ান প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও রোহিতের ব্যাটিং ঝড় থামেনি। ক্রিজে এসে আরেক দফা ঝড় তোলেন বিরাট কোহলি।মাত্র ৫২ বলে ১০০ রান করেন কোহলি।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড (৩৫০/৯)
টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মাইক হাসি। ব্যাটিং এ নেমে দুই ওপেনার ম্যাথু হেইডেন এবং শেন ওয়াটসন ক্রিজে ঝড় তোলেন। ৬৯ বলে ৬৮ রানে ওয়াটসন ফিরে গেলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন হেইডেন। ওয়াটসন আউট হওয়ার পর ব্যাটসম্যানরা প্যাভিলিয়নে ফেরার পথ ধরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যান তিনি। ১৬৬ বলে ১৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। এর ফলেই অস্ট্রেলিয়া পায় ৩৪৬ রানের বড় সংগ্রহ।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডারের কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেনি।মিডল অর্ডারে ক্রেইগ ম্যাকমিলান এবং ব্রেন্ডন ম্যাককলামের ব্যাটে ভরে জয়ের বন্দরে ভেড়ে নিউজিল্যান্ড।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড (৩৪০/৫)
টসে জিতে নিউজিল্যান্ড বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাটিং এ নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারায় অস্ট্রেলিয়া।দ্রুত উইকেট চলে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাইক হাসি। হাসি এবং ব্যাড হগের ব্যাটে ভরে করে ৩৩৬ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।
৩৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং এর উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।রস টেইলর,পিটার ফুলটন এবং ক্রেইগ ম্যাকমিলানের উপর ভর করে সহজেই জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
- অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড (৩৩৪/৮)
টসে জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। ব্যাটিং এ নেমে শুরুতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান ম্যাট প্রায়র। এরপর জোনাথন ট্রটের ব্যাটে ভর করে ৩৩৩ রানের বড় পুঁজি পায় ইংল্যান্ড।
৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে সবার ব্যক্তিগত ছোট ছোট সংগ্রহে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্ব্বোচ্চ সংগ্রহ ছিলো অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের ৮২ রান।