নব্বই দশকের পর থেকে একটা কথার খুব প্রচলন ছিল – শচীন টেন্ডুলকার নিজের জন্য খেলেন, তিনি বড় রান করলেই ভারত হেরে যায়। এই কথাই অনেকগুলো বছর পেরিয়ে এসে লেগেছে বিরাট কোহলির গায়ে। যখনি তিনি হাফ-সেঞ্চুরি বা সেঞ্চুরি করেন কিন্তু দল জিততে পারে না তখনি স্বার্থপর ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় তাঁর পাশে।
সবশেষ রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর পরাজয়ের পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। নিন্দুকদের যুক্তি, কোহলির স্ট্রাইক রেট ১৫৬.৯৪ অন্যদিকে আরেক সেঞ্চুরিয়ান জশ বাটলার রান করেছেন ১৭২.৪১ স্ট্রাইক রেটে। স্ট্রাইক রেটের এই পার্থক্যের জন্যই মূলত পিছিয়ে পড়েছে ব্যাঙ্গালুরু।
কিন্তু এই পুরো ব্যাপারে উপেক্ষা করা হয়েছে ম্যাচ পরিস্থিতি। বাটলার ব্যাটিং করেছেন ইনফর্ম সাঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে। স্যামসন নিজেও ব্যাট করেছিলেন ১৬৫ স্ট্রাইক রেটে; ফলে ইংলিশ ব্যাটারের কাজটা তুলনামূলক সহজ হয়ে গিয়েছিল। অথচ কোহলি পুরোটা সময় ব্যাট করেছেন ছন্দহীন ব্যাটারদের সঙ্গে। ফাফ ডু প্লেসিসের সাথে ১২৫ রানের জুটি গড়েছেন ঠিকই, সেখানে ডু প্লেসিসের অবদান ছিল ৩৩ বলে ৪৪!
ডু প্লেসিস ছাড়াও দলটির বাকি দুই বিদেশি ক্রিকেটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর ক্যামেরন গ্রিন মোটেই ফর্মে নেই। ফলে ব্যাটিং লাইন আপের পুরো ভার এসে পড়েছে বিরাটের উপরেই, সেজন্যই হয়তো ঝুঁকি নিয়ে খেলার সাহস হয় না তাঁর। অন্য দলের টপ অর্ডার ব্যাটারদের মত আগ্রাসী হতে পারেন না শুরু থেকে। কেননা তিনি অল্প রানে আউট হলে হয়তো লড়াইয়ের পুঁজিও জমা হবে না বোর্ডে।
চ্যালেঞ্জার্সদের হেরে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ তাঁদের নখ-দন্তহীন স্পিন বিভাগ। রাজস্থানের দুই স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিন ও যুজবেন্দ্র চাহাল আট ওভার বল করে খরচ করেছেন ৬২ রান। অথচ তাঁদের দুই স্পিনার মায়াঙ্ক দাগার আর হিমানশু চার ওভারেই বিলিয়েছেন ৬৩ রান – বিশাল পার্থক্য, কিন্তু এসব নিয়ে আলোচনার যেন কেউ নেই।
ম্যাচে যাই ঘটুক, আরসিবি হারলেই আঙুল তোলা হবে বিরাট কোহলির দিকে এটিই এখন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়া সত্ত্বেও সমালোচনা শোনা হয়তো বিরক্ত করে চলছে তাঁকে। তিনি চাইলেই জবাব দিতে পারেন, কিন্তু সেজন্য সতীর্থদের সমর্থন প্রয়োজন। তাঁরা পারফর্ম করতে পারলে তাঁর কাছ থেকে আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা যাবে নিশ্চয়ই।