রিয়েলিটি চেক? এটাই তো সত্য, এটাই তো বাংলাদেশ দলের আসল চিত্র। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনও সেই পুচকে বাঘ বাংলাদেশ। সেদিন গজানো চাড়াও তাই দিচ্ছে তিক্ত স্বাদ। দলের ভেতরটা যে ফাঁপা সেটা আরও একবার সামএ নিয়ে এলো যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। স্বাগতিকদের মাটিতে দাঁড়িয়ে দুই যুগের ক্রিকেট সংস্কৃতি। কি অসহায়! কি নির্লিপ্ত নিবেদন! কি নিদারুণ লজ্জা! যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। ৫ উইকেটের দারুণ জয় ছিনিয়ে নিয়েছে মার্কিন ক্রিকেট দল।
কোন ডিপার্টমেন্টেই বাংলাদেশকে মনে হয়নি আমেরিকার থেকে এগিয়ে। বরং একই শক্তিমত্তার দুই দলের কি শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই ঠেকেছে। এমনটা হওয়ার কথা ছিল কি? বোধহয় না। দাপট দেখাবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। দুমড়ে-মুচড়ে ফেলবে নব দিগন্তের পাণে হাত বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্রকে। কিন্তু হয়নি তেমন কিছুই।
টসে জিতে মার্কিন অধিনায়কের বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত, সফরকারীদের নিমন্ত্রণ জানানো হলো আগে ব্যাট করবার। মোনাঙ্ক প্যাটেলের সিদ্ধান্ত যেন এক আকাশসম চাপ হয়ে নেমে এলো বাংলাদেশের ব্যাটারদের উপর। টাইগাররা হয়ত ভেবেছিল সব হবে তাদের ইচ্ছেয়। মানসিকভাবে লড়াই করবার বিন্দু পরিমাণ রসদও যেন বাকি নেই।
যেই উইকেটের দাঁড়িয়ে আনকোড়া যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ জিতে নেন ৩ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে, সেই উইকেটে ব্যাট চালাতে লিটন, সৌম্যদের ঘাম ছুটে যায়। টি-টোয়েন্টির প্রেক্ষাপটে প্রায় অথর্ব এক টপ অর্ডার, নিজেদের পরিবর্তনের প্রয়াসই করেনি।
জবুথবু হয়ে বাইশ গজে টিকে থাকবার সে কি প্রচেষ্টা। তবুও তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের ব্যাট চলেছিল খানিকটা। ওই টেনেটুনে দেড়শ গণ্ডি পেরিয়েছে বাংলাদেশ। ইতিহাস সেরা পেস আক্রমণ এক ঝুড়ি স্পিনার। এই নিয়ে ওমন স্লো উইকেটে দারুণ করবে বাংলাদেশ। তেমনই ছিল প্রাথমিক ভাবনা।
তবে সময় যত গড়িয়েছে বাংলাদেশের হাত থেকে লাগাম ছুটেছে। দূর্বার গতির ঘোড়ার মত জয় ছুঁয়েছে আমেরিকা। মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলামরা উইকেটের দেখা পেয়েছেন। কিন্তু মার্কিনিদের আটকে রাখা দায়। তারা কোন তোয়াক্কাই করল না। হারাবার ভয় না থাকলে যা হয়। খেলাটাকে গভীর পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছে। হাত ফসকে বেড়িয়ে যাওয়ার মুহূর্তে নির্ভয়ে ব্যাট চালিয়েছে।
ব্যাস! কোন টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জয়ের ইতিহাস লিখেছেন মোনাঙ্ক প্যাটেলের দল। সব ইতিহাসের দ্বিতীয় প্রান্তে থাকাই যেন বাংলাদেশের অভ্যেস। সেটা বদলানো দায়। ওই যে কথায় আছে না মানুষ অভ্যাসের দাস।