লম্বা সময় পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা, সরাসরি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে – ঋষাভ পান্তকে তাই আস্থার প্রতিদান দিতেই হত। প্রথম সুযোগেই সেটা করেছেন তিনি, বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ এক হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। সেই সাথে মূল একাদশে কেন সাঞ্জু স্যামসন নয় বরং তাঁকেই রাখা উচিত সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন পারফরম্যান্স দিয়ে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভয়ানক এক সড়ক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন এই ক্রিকেটার। জীবন, মৃত্যু আর পঙ্গুত্বের সন্ধিক্ষণ থেকে লড়াই করে মাঠে ফিরেছিলেন সবশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। তবে তীর্থের কাকের মত অপেক্ষায় ছিলেন আকাশী-নীল জার্সির জন্য, আইপিএলের দারুণ পারফরম্যান্স সেই অপেক্ষা মিটিয়ে দিয়েছে বটে।
জাতীয় দলে ফিরতে এই ব্যাটার কতটা মরিয়া ছিলেন সেটা তাঁর শরীরী ভাষাতেই ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করার পরই হেলমেট খুলে ভুবন ভোলানো হাসি উপহার দিয়েছিলেন তিনি; যেন ঘোষণা দিতে চাইলেন ‘আই অ্যাম ব্যাক’।
স্বেচ্ছার ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়ার আগে এদিন ৩২ বলে ৫৩ রান করেছেন পান্ত, ইনিংসটি খেলার পথে সমান চারটি করে চার এবং ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। তিন নম্বরে নেমে দলকে উড়ন্ত বড় রান করার ভিত গড়ে দেয়ার কাজটাই করেছিলেন। অবশ্য তাঁর এমন ব্যাটিং কেবল ইনিংস গড়ে দেয়ার কাজ করেনি বরং স্বস্তি আর তৃপ্তি এনে দিয়েছে ভারতীয় সমর্থকদের হৃদয়ে।
কি ছিল না এই বাঁ-হাতির খেলায়; লেগ স্ট্যাম্প করিডোরের বলকে ফ্লিক করে বাউন্ডারি আদায় করা কিংবা সুইপ আর রিভার্স সুইপে সাকিব আল হাসানকে অতিষ্ঠ করা সবকিছুই করেছেন তিনি। আর নবম ওভারে দেখিয়েছেন নিজের সিগনেচার শট – ওয়ান হ্যান্ডেড সিক্স; এক হাতেই লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।
বিশ্বকাপে ঋষাভ পান্তের সুযোগ পাওয়া নিয়ে সামান্যতম যে সংশয় ছিল সেটা কর্পূরের মত উবে গিয়েছে। টিম ম্যানেজম্যান্ট যেই ভাবনায় সরাসরি তাঁকে বিশ্বকাপে নিয়ে এসেছেন সেই ভাবনার যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছেন তিনি নিজেই। এখন বিশ্ব মঞ্চে এই প্রত্যাবর্তনকে রাঙানোর পালা।