সেই সাকিবই এখন দলের বোঝা!

গেল প্রায় ১৮ বছর ধরে এই প্রশ্নটা হয়ত কেউ করেনি। তবে এখন যেন সময় এসে গেছে। সাকিব আল হাসান ঠিক কি কারণে রয়েছেন দলে? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্ন তোলা কঠিন। কেননা গেল প্রায় দুই দশক ধরে এই প্রশ্নটা তোলার সুযোগই দেননি সাকিব। ব্যাটে-বলে পারফরম করে আগলে রেখেছেন বাংলাদেশ দলকে।

কিন্তু সেই সাকিব যেন ক্রমশ এক বোঝায় পরিণত হচ্ছেন। অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ১৮টি বছর তিনি ক্রিকেট খেলেছেন। বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন, ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে খেলেছেন গোটা বিশ্বজুড়ে। কঠিন থেকে কঠিনতম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছেন তিনি। তবুও প্রায় প্রতিটা সময় দলের জন্যে এগিয়ে এসেছেন। দলের হয়ে কার্যকর অবদান রেখেছেন।

কিন্তু এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই সাকিবের যেন অভাবটা স্পষ্ট। ব্যাট হাতে সাকিব ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকেই অকার্যকর। চোখের সমস্যার কারণে তিনি ব্যাটিংটা করতে পারছেন না। তবুও তাকে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নামটা সাকিব বলেই হয়ত।

ধারণা করা হয়েছিল ব্যাট হাতে তিনি হয়ত খুব বেশি অবদান রাখতে পারবেন না। সেটা সত্যই প্রমাণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে সাকিব বল হাতেও প্রচণ্ড অধারাবাহিক হয়ে উঠেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচ মিলিয়ে মাত্র ৪ ওভার বল করেছেন।

৩৬ রান দিয়েছেন এই চার ওভারে। উইকেটের সংখ্যা শূন্য। এই পরিসংখ্যানও ঠিক ততটা ভয়ংকর নয়। সাকিবের কোটার চার ওভারই পূর্ণ করবার সাহস পাচ্ছেন না অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মোটে ১টি ওভার করেছেন সাকিব। অথচ মাঝে পঞ্চম উইকেটে এনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার ৭৯ রানের পার্টনারশীপ গড়ে ফেলেন।

নিকট অতীতেও এমন জমে যাওয়া জুটিতে ভাঙন ধরাবার জন্যে সাকিবই ছিলেন ভরসার নাম। কিন্তু সে ভরসা জায়গাটা এখন আর নেই। তার জায়গায় দীর্ঘদিন বল না করা মাহমুদউল্লাহও ভাল বল করে যাচ্ছেন এবারের বিশ্বকাপে।

এখানে হয়ত ওই সেই আজগুবি তত্ত্ব হাজির করতে চাইবে অনেকে। উইকেটে বা-হাতি ব্যাটার ছিলেন বলেই বা-হাতি বোলার আসেননি বোলিংয়ে। সাকিব আল হাসানের ক্ষেত্রে এই খোড়া যুক্তি কতটুকুন খাটে? এই বিষয় যদি সত্যিও হয়, তাহলে সাকিব নিজের উপর নিজেই আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। সেই সাথে অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টও তার উপর এখন আর ভরসা করতে পারছে না।

ব্যাটিংটা সাকিব করতে পারছেন না চোখের সমস্যা রয়েছে। বোলিংটা তিনি করছেন না বা তাকে করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাইতো প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে, কেন সাকিব দলে? শতভাগ ফিট না হয়ে খেলাটা যে বেইমানি- সেটা তো তিনিই বলেছিলেন। ফিট না হয়েও, পারফরম না করেও দলে নামের ভারে টিকে থাকা তাহলে গুরুতর অপরাধ, নয় কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link