ইউরো সবচেয়ে কঠিন টুর্নামেন্ট কি না তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু ইউরো যে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিনোদনের সমুদ্র, সেটা অস্বীকারের কোন সুযোগ নেই। ছোট দল, বড় দলের ব্যবধান ডিঙিয়ে সমানে সমানে লড়াই কিংবা অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের রূপকথা রচনা সবই দেখা যাচ্ছে চলতি ইউরোতে। সবশেষ ইউক্রেন আরো একবার দেখালো কিভাবে চরম দুঃসময়ের মাঝেও ঘুরে দাঁড়াতে হয়, জিততে হয়।
আন্দ্রে লুনিনের অমার্জনীয় দুই ভুলের সুবাদে তুলনামূলক দুর্বল রোমানিয়ার কাছে হেরে বসেছিল ইউক্রেন। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে জয়ের কোন বিকল্প ছিল না তাঁদের সামনে, অথচ ম্যাচের সতেরো মিনিটের মাথায় ইভান স্ক্রাঞ্জ গোল করে এগিয়ে দেন স্লোভাকিয়াকে। এরপর আরো ছন্নছাড়া রূপ নেয় ইউক্রেন – বিদায় তখন দরজায় কড়া নাড়ছিলো।
কিন্তু বিরতির পনেরো মিনিট, হুট করেই সবকিছু বদলে দিয়েছে। কি জানি, কোচ সার্জিই রেব্রভ শিষ্যদের কি অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত করেছেন; দ্বিতীয়ার্ধে তাঁরা নিখুঁত পরিকল্পনায় দীর্ঘদিন মনে রাখার মত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে।
অলেকসান্দর জিনচেঙ্কোর ক্রস থেকে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন মায়কোলা সাপারেঙ্কো। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে তিন বছর পর আন্তর্জাতিক গোলের স্বাদ পান তিনি।
সেই সাপারেঙ্কো আবারো স্কোরবোর্ডে নাম তুলেছিলেন ম্যাচ শেষের দশ মিনিট আগে। না, এবার আর নিজে গোল করাননি বরং বদলি নামা রোমান ইয়ারেমচুককে দিয়ে গোল করিয়েছেন। আর তাতেই বদলে গিয়েছে ইউক্রেনের ইউরো ভাগ্য। সেই সাথে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করার কীর্তি নিজের করে নিয়েছেন ইয়ারেমচুক।
এই জয়ে রাউন্ড অব সিক্সটিনে জায়গা করে নেয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ইউক্রেনের জন্য। তাছাড়া আগের ম্যাচে হেরে বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে তাঁরা। এখন অপেক্ষা শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামকে হারানোর, তাহলেই কোন হিসেব নিকেষ ছাড়া সেরা ষোলোতে পৌঁছে যাবে মুন্ড্রিক, ট্রুবিনরা।