আর্জেন্টিনার কাছ থেকে শিখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা!

ঠিক কতটা পথ হাটলে পথিক হওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তর জানা আছে আর্জেন্টিনার। দীর্ঘ ৩৬ বছরের অপেক্ষা অবসান ঘটিয়ে তারা জিতেছিল বিশ্বকাপ। এবার পালা দক্ষিণ আফ্রিকার। সেই ১৯৯২ সালে প্রথমবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলা। দীর্ঘ ৩২ বছরে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখল প্রোটিয়ারা।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে কোনবারই তারা সেমিফাইনালের গণ্ডি পেরুতে পারেনি। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান অবশেষে হয়েছে। এইডেন মার্করামের দল করে দেখিয়েছে। কত তাবড় তাবড় খেলোয়াড়রাই তো জড়িয়েছিলেন প্রোটিয়াদের জার্সি গায়ে। কেউ কখনো যা পারেননি তা করে দেখিয়েছেন এই কুইন্টন ডি ককদের দক্ষিণ আফ্রিকা।

আফগানিস্তানকে একেবারে নাস্তানাবুদ করেই তারা ফাইনালে উঠেছে। কোনরকম প্রতিযোগিতা তৈরির সুযোগই দেননি মার্কো ইয়ানসেন, কাগিসো রাবাদারা। আফগানিস্তান স্রেফ উড়ে গিয়েছে প্রোটিয়া বোলারদের বোলিং তোপে।

অথচ এই তো সেদিনও দক্ষিণ আফ্রিকার গায়ে লেপ্টে ছিল ‘চোকার’ তকমা। পুরো টুর্নামেন্টে ভাল খেলে, নকআউটে হোঁচট খেয়েছে তারা বারংবার। কোয়ার্টার ফাইনাল হোক কিংবা সেমিফাইনালেই থেমেছে তাদের যাত্রা। কেমন একটা এলোমেলো হয়ে যেতেন তারা নকআউটে পৌঁছানো মাত্রই। কিন্তু এবারের যাত্রা ভিন্ন।

দক্ষিণ আফ্রিকার এবারের যাত্রাকে ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনার যাত্রার সাথে চাইলেই মেলানো যায়। হোঁচট খেতে খেতেও আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। হারতে থাকা ম্যাচেও নিজেদের পক্ষে নিয়ে এসেছে ফলাফল। ক্রাঞ্চ মোমেন্টে স্নায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার অভিযোগ ছিল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে। সেই শাপমোচনও করে ফেলেছে এবার তারা।

পচা শামুকে পা কাটার ইতিহাসও তাদের কম ছিল না। তেমন ঘটনা প্রায় ঘটেই গিয়েছিল। নেপাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গিয়েছিল। সেখান থেকে ১ রানের জয় নিয়ে ফিরেছেন এনরিখ ক্লাসেনরা। নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের বিপক্ষে পরাজয়ের খুব কাছে গিয়ে জয় নিয়ে ফিরেছে তারা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকেও পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে এনরিখ নর্কিয়ারা।

তবে একটা জায়গায় আর্জেন্টিনা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ যাত্রায় রয়েছে তফাৎ। আর্জেন্টিনা তাদের ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন বটে। কিন্তু অপরাজিত থাকতে পারেননি। ৩২ বছরের অপেক্ষার অবসান দক্ষিণ আফ্রিকা ঘটিয়েছে অপরাজিত থেকেই। এবার স্রেফ শিরোপা জিতে সফলতার ষোলকলা পূর্ণ করবার পালা। এবার যে তারাই শিরোপার দাবিদার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link