শান্তিপ্রিয় একজন মানুষ। গুজরাটের বাসিন্দা। ব্রিটিশ পতনের কাণ্ডারি। গল্পের এটুকু বললে চোখের সামনে লাঠি হাতে সাদা ধুতি-শাল পরা একজন ছোট-খাটো মানুষের চেহারা চোখে ভাসে। তবে, এই গল্পটা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নয়। এই ভদ্রলোক নিতান্তই একালের মানুষ। তিনি লাঠি হাতে অহিংসার স্লোগান তুলে ভারতের স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন না।
তবে, এই বাপুও লড়াই করেন। লড়াই করেন ভারতের বিজয়ের জন্য, ভারতেকে সত্যিকারের সাফল্য এনে দেওয়াটাই লক্ষ্য ‘বাপু খ্যাত অক্ষর প্যাটেলের। আর সেই যাত্রায় শতভাগ সফল অক্ষর। সত্যি, মহেন্দ্র সিং ধোনি অক্ষরের মোক্ষম এক নামকরণই করেছেন।
গায়ানার উইকেট আক্ষরিক ভাবেই ব্যাটিং সহায়ক নয়। বল ক্রমাগত আসছিল নিচু হয়ে। তা দেখে ভারতের স্পিন আক্রমনের চোখ ছানাবড়া হতে বাধ্য। আর সেই উইকেট আর কন্ডিশনের সেরা ব্যবহারটাই করলেন অক্ষর প্যাটেল।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারে তিনি এক হাতেই ধস নামান। জশ বাটলার, মঈন আলী আর জনি বেয়ারস্টো – এই তিনজনকে আউট করার পর আর ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের কিছু অবশিষ্ট ছিল না। চার ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিনি নেন তিনটি উইকেট। এখানেই বিশ্বকাপ ফাইনালের জায়গা নিশ্চিত হয় ভারতের।
‘বাপু’রা অবশ্য ইংল্যান্ডে বিপক্ষে বরাবরই সফল। কেবল ভারতের স্বাধীকার আন্দোলন নয়, ক্রিকেটে মাঠেও। ১৯৬৪ সালের মাদ্রাস টেস্টে এই ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষেই টানা ২১ টা সহ মোট ২৭ টা মেইডেন দিয়েছিলেন বাপু নাদকার্নি। ৩২ ওভারে তিনি রান দিয়েছিলেন মাত্র পাঁচটি। অবশ্য, এই বাপুর অর্জনও অবশ্য ৬০ বছর আগের অর্জনের চেয়ে কম নয়।
বলাই বাহুল্য, বোলিংয়ে সাফল্য পাওয়ার আগে তিনি ব্যাটিংয়েও ছয় বলে করে গেছেন ১০ রান। আর সেটাও ভারতের জয়ের ভিত্তিটা আরও খানিকটা জোরদার করে। আর দুই বছর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে সেমিফাইনালের বদলাও নেওয়া হয়ে যায় এর মধ্য দিয়ে। না, এই বাপু শান্তিপ্রিয় হলেও ভিতরে ভিতরে তিনি ক্ষোভের আগুন পুষে রাখতে জানেন।