‘বিরাট’ এক বিদায়

মধুরেণ সমাপয়েৎ – মানে কোনো কিছুর সমাপ্তি সুন্দর হওয়াটাই কাম্য। আর ক্রিকেট মাঠে বিরাট কোহলির চেয়ে সুন্দর আর কেই বা হতে পারে। সেই সুন্দর ব্যাটিংটা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আর অন্তত দেখা যাবে না। বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার হাতে জানিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি।

আর এরই মধ্য দিয়ে ক্রিকেটের ইতিহাসে বর্ণাঢ্য এক যাত্রার অবসান হল। সুদিনেই বিদায় বলে ফেলার, বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারা – এই সুযোগ ক’জনই বা পান। বিরাট সেই গুটি কয়েক অমরত্ব পাওয়া মানুষদের একজন।

ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫৯ বলে ৭৬ রান করেন। ভারত বড় সংগ্রহ গড়ে এই মহাতারকার ব্যাটে ভর করে। ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও দু’টি ছক্কা। ম্যাচ সেরার পুরস্কার তাঁর হাতেই সবচেয়ে বেশি মানায়। ভারতকে ১৩ বছর পর বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেওয়ার কাণ্ডারি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে যা যা জয় করা সম্ভব তার প্রায় সবই জিতে ফেলেছেন কোহলি।

এবার অন্তত একটা ফরম্যাটকে বিদায় বলাই যায়। ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে বিরাট কোহলি বলেন, ‘এটা আমার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই শিরোপা আমরা অর্জন করতে চেয়েছি। একদিন আপনার মনে হবে রানই করতে পারছেন না, তারপরে কিছু না কিছু ঘটবে। ঈশ্বর মহান। তিনি চাইলে সব সম্ভব, আমি দলের কাজটি করেছি। ইটস নাও ওর নেভার -ভারতের হয়ে আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ — সবটুকু কাজে লাগাতে চেয়েছি।

২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ সংস্করণে অবসর নেওয়া কোহলি ক্যারিয়ারে ১২৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ৪১৮৮ রান। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে রানের দিক থেকে রোহিত শর্মার পরই বিরাট কোহলির নাম। হয়তো এই পরিসংখ্যান কালক্রমে থাকবে না। কোহলিকে টপকে আরও বিরাট হয়ে উঠবেন অন্য কেউ। তবে, বিরাট কোহলির নামটা টিকে থাকবে চিরকাল।’

বিরাট এখন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চান ভারতের আগামীর প্রজন্মকে। তিনি বলেন, ‘ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরতে চেয়েছিলাম আমরা, সেটা পেরেছি। পরিস্থিতিকে সম্মান জানিয়ে খেলেছি। অবসরের বিষয়টা ওপেন সিক্রেট ছিল, এবার দায়িত্ব নেবে পরবর্তী প্রজন্ম। দলে দুর্দান্ত কিছু তরুণ আছে। তাঁরা ভারতের পতাকা উঁচু করে তুলবে।’

শেষ, উচ্ছ্বাসের মঞ্চে একটা বিষাদের ছায়া। বিরাট এক গর্জন অবশেষে থামল ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে। এবার কোহলির বাড়ি ফেরার পালা।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link