‘এন্ড অব অ্যান এরা’। মহাকালের সমাপ্তি। দুই কিংবদন্তির শেষের শুরুটা হয়ে গেছে। এর থেকে বর্ণিলভাবে হয়ত আর কেউ ইতি টানতে পারেননি এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিলেন। বিশ্বকাপের শিরোপাতে চুমু একে দিলেন। উষ্ম এক চুম্বনে পূর্ণতা পেল বিরাটের ক্যারিয়ার। রোহিতের চোখের কোণে জমাট পানিই বলে দেয় তার জন্যে শিরোপা জেতা ছিল কতটা প্রয়োজনীয়।
কত সহস্র দূরত্ব শেষে পথিক অবশেষে ফিরল তার গন্তব্যে। হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হচ্ছে বটে। তবুও তো যা কিছু হয়েছে শুরু তার আছে শেষ। রোহিত-বিরাট এক ফরম্যাট দিয়ে সেই গোধুলীর আলোর সূর্য বনে গেলেন। এই দুইজনের ছিল নাকি কোন্দল। সব ভুলে তারা গলায় রেখেছেন হাত। হেটেছেন একই পথে। শেষটায় কিংবদন্তিদের ছোঁয়া পেয়েছে রুপালি সেই ট্রফিটা। সেটা কি ট্রফির পূর্ণতা নয়!
বৃহৎ স্বার্থে ব্যক্তি স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে হয়। অধিনায়কত্বের রুঢ় বাঁকে বিরাটের মনে জমেছিল অভিমান। ব্যাটের আঘাতে সে অভিমানকে তিনি পাঠিয়েছেন দূর সীমানায়। রোহিত তো পরিসংখ্যান নামক সংখ্যা খেলার প্রলোভনকে করেছেন বাউন্ডারি ছাড়া। দু’জনে এক হয়ে লেখেছেন এক রুপকথা।
আইসিসি আয়োজিত ট্রফির খরা মিটিয়েছে তারা ১১ বছর বাদে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আয়োজনেই জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন রোহিত। নবম চেষ্টায় আরও একবার তিনি আস্বাদন করলেন সেই পুরনো স্বাদ। মহেন্দ্র সিং ধোনির পর তার হাত ধরেই এসেছে ভারতের সাফল্য।
অন্যদিকে বিরাট কোহলি নিজের শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা সেভাবে রাঙিয়ে যেতে পারেননি বটে। কিন্তু ফাইনালের মঞ্চে ঠিকই স্বরুপের বিরাটকে দেখেছে বিশ্ব। এমন কঠিন মুহূর্তে বিরাট জ্বলে উঠতে পারেন বলেই তো বিশ্বজুড়েই সমাদৃত তিনি। বিরাটের চোখ জোড়া থেকেও ঝরেছে প্রশান্তির অশ্রু। শেষবেলায় বিরাট-রোহিত যুগলবন্দীতে আলোকিত হল ভারত।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হয়ত এই দুইজন পেয়ে যেতে পারতেন অমরত্ব। কিন্তু মাইটি অস্ট্রেলিয়া তা হতে দেয়নি। তাহলেই সম্ভবত ষোলকলা পূর্ণ হত রোহিতের। সে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাঠে নামবেন রোহিত। ক্রিকেটকে পূর্ণ করা বিরাটও তো আরেকবার কাঁধে রাখবেন হাত। কাল্পনিক কোন এক দৃশ্যে বলবেন, বন্ধু চল, ব্যাটটা দে, রাখব হাত তোর কাঁধে, গল্পেরা ওই ঘাসে, তোর টিমে তোর পাশে।