বিশ্বাস, স্রেফ বিশ্বাসের জোরে রিয়ান পরাগ এখন ভারত জাতীয় দলে। তার উপর বিশ্বাস রেখেছিল সকলে মিলে। বিশেষ কৃতিত্ব পেতেই পারে রাজস্থান রয়্যালস। এখন অবশ্য তার উপর চলছে পরীক্ষা। ব্যাটার হিসেবেই কেবল নয়, তাকে ভারত যেন চাইছে একজন অলরাউন্ডার হিসেবে।
ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের এই মুহূর্তে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোন অ্যাসাইনমেন্ট নেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বটে। এমনকি নতুন শুরুতে যোগ্য সেনানী খুঁজে বের করবার চেষ্টা চালাচ্ছেন গৌতম গম্ভীর। সেই যাত্রায় রিয়ানকে দিয়ে বোলিংটাও আদায় করে নিচ্ছেন গৌতম।
একেবারে ‘ফ্রন্টলাইন বোলার’ হিসেবেই যেন রিয়ানকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন গৌতম। অন্ততপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রিয়ান পরাগের লেগব্রেক বোলিং কাজে আসতে পারে ভারতের জন্য। সেজন্যই সম্ভবত দুই ম্যাচেই রিয়ানকে পূর্ণ চার ওভার করে বোলিং করতে দেখা গেছে।
প্রথম ম্যাচে তিন উইকেটও বাগিয়েছিলেন তিনি। যদিও অধিকাংশই ছিল টেলএন্ডারদের উইকেট। তবুও তা নিশ্চিতরূপেই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে রিয়ানের। কেননা সেদিন ব্যাট হাতে কাজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেননি তিনি। ৬ বলে ৭ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। শত পরিশ্রম আর খারাপ সময়ে পেছনে ফেলে তিনি আজ জাতীয় দলে।
শুরুতে ঐ তিনটি উইকেটই তার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে হয়ত। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে বল হাতে উইকেটের দেখা তিনি পাননি। বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচটিতে ৪ ওভারে ৩০ রান খরচায় তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বনিম্ন খরুচে বোলার। সেটাও তার জন্য প্রাপ্তিই বটে।
কেননা একটা দীর্ঘ সময় ধরে তিনি অফ ফর্মের গ্যাড়াকলে ছিলেন আটক। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল অবধি তেমন কোন সফলতার দেখা তিনি পাননি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে। তার প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। তাইতো এই দীর্ঘ সময় ধরে রাজস্থানের ডেরায় ছিলেন রিয়ান পরাগ। যার প্রতিদান তিনি দিয়েছেন ২০২৪ আইপিএলে।
১৫ ম্যাচে প্রায় দেড়শো স্ট্রাইক রেটে ৫৭৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপরই মূলত জাতীয় দল থেকে ডাক আসে তার। যদিও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভারতের হয়ে আলো ছড়াতে হয়েছিলেন ব্যর্থ। তবুও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
সেখানেই নতুন দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তার কাঁধে। সাইডবেঞ্চে যদিও বিশ্বকাপ জেতা শিভাম দুবে বসে আছেন। তবুও উইকেট বিবেচনায় একজন স্পিনিং অলরাউন্ডারকে খেলানো যুক্তিযুক্ত বলেই তাকে একাদশে নিয়মিত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই সুযোগ গুলো কাজে লাগানো প্রয়োজন রিয়ানের।
ভারত দলে প্রতিযোগিতার অন্ত নেই। সেই প্রতিযোগিতার মঞ্চে দীর্ঘক্ষণ সাদামাটা পারফরমেন্সে টিকে থাকা দায়। তাই বহু কষ্ট আর কালক্ষেপণ শেষে পাওয়া এই সুযোগ হেলায় হারাতে চাইবেন না রিয়ান পরাগ, সুযোগ যে আর বারবার মেলে না।