একটা ঘুষি, এরপরই তাল হারিয়ে ফেললেন বক্সার অ্যাঞ্জেলিনা ক্যারিনি। সাথে সাথেই পরাজয় মেনে রিং থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। প্যারিস অলিম্পিকে ঘটেছে এমনই এক বিতর্কিত ঘটনা; স্রেফ ৪৬ সেকেন্ডের মাঝে সেদিন হেরে যেতে হয়েছিল তাঁকে; আর এক ঘুষিতেই ম্যাচ জিতে তখন উদযাপনে মত্ত আলজেরিয়ান ইমানে খেলিফ।
কিন্তু ক্যাারিনি যেতে যেতে যা দাবি করেন তাতেই বাঁধে বিপত্তি। তিনি বলেন, ‘আমার নাক ও মুখ ফেটে রক্ত বের হচ্ছিলো। আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না, এখন পর্যন্ত এত শক্তিতে কেউ আমাকে ঘুষি মারেনি। রিং থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত আগে থেকে ঠিক করা ছিল না।’
এরপরই মূলত শুরু হয় ইমানের অতীত নিয়ে আলোচনা, এবং সেখান থেকে জানা যায় ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) তাঁকে নিষিদ্ধ করেছিল ‘জেন্ডার এলিজিবিলিটি’ পরীক্ষায় পাশ করতে না পারায়। তাঁর সঙ্গে আরেক বক্সার লিন ইউটিংকেও একই কারণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল।
আইবিএ এর বিবৃতি অনুযায়ী, নারী হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেও এই আলজেরিয়ানের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি পাওয়া গিয়েছিল। সেজন্য গত বছর ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তাঁকে। এরই সূত্র ধরে উঠে এসেছে এলজিটিবিকিউ+ ইস্যু; কেননা কেউ কেউ মনে করছেন তিনি আদতে পুরুষ কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে অংশ নিয়েছেন অলিম্পিকে।
কিন্তু আইবিএ এর পরীক্ষাটির কোন গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়া না থাকায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) খেলিফের অলিম্পিক অংশগ্রহণে বাঁধা দেয়নি। তিনি জন্মসূত্রে নারী হওয়ায় কোন পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয়নি তাঁরা। তবে ক্যারিনির বিপক্ষে ম্যাচের পরই বিশ্ব জুড়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা, অনেকেই আইবিএ এর সেই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মতামত দেন। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক সংস্থা নিষিদ্ধ কাউকে অলিম্পিকে খেলতে দেয়া উচিত হয়নি।
অবশ্য ইতালিয়ান ক্রীড়বিদ প্রতিপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতা রাখতে চান না। খেলার মধ্যে এমন বিব্রতকর ঘটনা ঘটার জন্য ইতোমধ্যে দু:খপ্রকাশ করেছেন তিনি, এমনকি দু’জনের আবার দেখা হলে জড়িয়ে ধরবেন বলেও জানান।