সব ক্ষয়ে যায়। সজীব পাতাগুলো একদিন বয়সের হলুদাভ গায়ে মাখিয়ে ঝড়ে যায়। সবাই জানে সুদিনের স্থায়িত্ব বেশিদিনের নয়। উজ্জ্বল এক নক্ষত্রও একদিন খসে যায় বিস্তৃর্ণ সেই নীলাম্বর থেকে। এসবই জানা সকলের। তেমনি করেই জানা আছে একদিন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বিদায় নেবেন। ফুটবলের সজীব বাগানে তিনি আর ফিরবেন না।
ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই রোনালদো ভক্তরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করছেন সেই দিনটির জন্যে। গোটা ফুটবল বিশ্বও প্রস্তুতি নিচ্ছে হয়ত। কিন্তু হুট করেই খোদ রোনালদো জানিয়ে দিয়েছেন তিনি বিদায় নেবেন শীঘ্রই। হুট করে দমকা হাওয়ায় বাড়ির জানালার ঝাপ্টা যেন দিয়ে গেছে। সজোরে আঘাত করেছে দেয়ালে। হৃদয় যেন জানালার সে কাঁচের মতই হয়েছে চূর্ণ।
বয়সটা তার হয়েছে ৩৯। ফুটবল দুনিয়ায় এই বয়সের সবাই সাজিয়ে ফেলে নিজেদের অবসর জীবন। অধিকাংশ ফুটবলাররাই গুটিয়ে ফেলেন নিজেদের খেলোয়াড়ী জীবন। রোনালদো সে পথেই হাটবেন। অনেক তো হল, এবার যে বিশ্রামে যাওয়ার পালা।
সেই ২০০২ সালে পেশাদার ফুটবল জীবন শুরু করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২২টি বছর। প্রায় দুই যুগ ধরে তিনি খেলে যাচ্ছেন ফুটবল। ক্লান্তিহীন এক যাত্রার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ইউরোপের বাঘা-বাঘা দলগুলোতে খেলেছেন তিনি। জিতেছেন কতশত শিরোপা।
শেষ বেলায় যখন তাকে নিয়ে কুৎসা রটানো হল, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ইউরোপ ছাড়ার। সৌদি আরবের পথে পা বাড়ালেন তিনি। জানালেন সেখানে বেশ সুখেই আছেন। সেই সাথে বলেও দিলেন, আল নাসের হতে চলেছে তার শেষ ক্লাব। সৌদিতেই তিনি ইতি টেনে দেবেন নিজের ক্যারিয়ারের।
যদিও সময়ের বাক্সতে এখনও বন্দী করেননি তার পরিকল্পনা। তিনি হয়ত নিজের সামর্থ্যের শেষটুকু দেখে যেতে চান। বড়জোর আর বছর দুই কিংবা তারও কম সময় রোনালদোকে দেখা যাবে ফুটবল মাঠে। এরপর বিদায় ঘটবে তার। ঠিক ওই বুড়িয়ে যাওয়া পাতার মত হলুদ রাঙা জার্সি গায়ে তিনি শেষবারের মত উঠে যাবেন মাঠ থেকে।
ভক্তদের সম্ভবত সেই দৃশ্যটা ইতোমধ্যেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে। মাঠ ভর্তি দর্শক। রোনালদো মুখে স্মিত হাসি, চোখের কোণে খানিক জল। হাত নাড়িয়ে বলে যাচ্ছেন, ‘আমি চললাম’।