হাসান মাহমুদ নিলেন পাঁচ উইকেট, নাহিদ রানার ঝুলিতে গেল চারটা আর তাসকিন আহমেদের ভাগ্যে এক – দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের সব কয়টি উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছে বাংলাদেশের পেসাররা। এমন দিন আগে কখনোই দেখা যায়নি, এর আগে কখনোই পুরো দশ উইকেট দখল করতে পারেননি তাঁরা। লাল-সবুজের ক্রিকেটাঙ্গনে যে পেস বিপ্লব ঘটেছে সেটার প্রতিফলন হিসেবেই রাওয়ালপিন্ডিতে হলো নতুন ইতিহাস।
পেসাররা অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই দাপট দেখাচ্ছেন; মাউন্ট মঙ্গানুইতে ইবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলামরাই ছিলেন জয়ের অন্যতম নায়ক। তবে সেবার এক ইনিংসে নয় উইকেট নিতে পেরেছিলেন তাঁরা, বাকি এক উইকেট পেয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এবার আর স্পিনারদের কোন সুযোগই দেয়া হয়নি।
উপমহাদেশে ‘পেস ব্যাটারি’ তকমাটা পাকিস্তানের সাথেই ছিল লম্বা সময়। বাঘা বাঘা পেসারদের জন্ম হয়েছে সেখানে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতেও তাঁদের পেস বিভাগের কত কত প্রশংসা।
এই পেসারদের নাকের ডগাতেই ভয়ঙ্কর প্রদর্শনী দেখালেন হাসান, রানা। অথচ এক সময় বাংলাদেশই খেলতো এক পেসার অথবা পেসার ছাড়াই। কিন্তু আজ বদলে গেল সবই, হাসান মাহমুদের একই চ্যানেল ধরে টানা বল করে যাওয়া নিখাদ টেস্টপ্রেমীদের মুগ্ধ করবেই। কিংবা প্রত্যাবর্তনে তাসকিনের ঝলক হাসি ফোটাবে সমর্থকদের মুখে।
আলাদা করে বলতে হয় দীর্ঘদেহী নাহিদ রানার কথা। ক’দিন আগেও যেটা ছিল দূরতম স্বপ্ন, সেটা বাস্তবে নামিয়ে এনেছেন তিনি। টানা বল করেছেন ঘন্টায় ১৪০ কিমির বেশি গতিতে, কখনো আবার ১৫০ এর কাঁটাও ছুঁয়েছেন। আর তাঁর আগ্রাসন তো চোখে ভাসছে এখনো, এমন খুনে মেজাজে টাইগার কোন বোলার বল করবেন তা কল্পনাতীত ছিল।
সবমিলিয়ে বাংলাদেশের পেস সংস্কৃতির জন্য একটা বিশেষ দিন পার হল। যে বিপ্লবের সূচনা ঘটেছিল বছর কয়েক আগে, সেটা এখন পূর্ণ যৌবনা। আর এই যৌবনের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষ শিবির। এবার সেই যৌবনকে দীর্ঘস্থায়ী করার পালা।