বাংলাদেশ কোন টেস্ট হারের পর দল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে নিয়মিতই। ঘরের মাঠে খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে হোয়াটওয়াশ হওয়ার পর তাই রীতিনীতি মেনে স্বাভাবিক ভাবে এবারও প্রশ্নটা উঠেছিলো। এর আগে আফগানিস্তানের সাথে বিধ্বস্ত হওয়ার পরও আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছিলো; অতীতেও নিয়মিত দৃশ্য ছিলো এগুলোই।
হারের পর আলোচনা সমালোচনা যে তীব্র গতিতে শুরু হয়; সময় গড়ানোর সাথে সাথে আরো ক্ষিপ্রতার সাথে সেটা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন মনে হচ্ছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলার জন্য শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে সাকিব আল হাসান নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরই আলোচনা বেশি চওড়া হয়েছে; অন্য দিকে বাঁক নিয়েছে।
ঐ জের ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সিদ্বান্ত নিয়েছিলো টেস্ট দলকে ঢেলে সাজানোর। আর আজ গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন তাঁদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু করেছে বোর্ড। বোর্ড আশাবাদী শুরুতে নতুনদের কাছে থেকে তামিম-সাকিবদের মতো পারফরম্যান্স না পেলেও আগামী দুই বছরে তৈরি হয়ে যাবে নতুন দল।
পাপন বলেন, ‘সেটার জন্য যে খেলোয়াড় তৈরি আছে, এ ব্যাপারে আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি। হতে পারে তারা প্রথমে তামিম-সাকিবের মতো পারফরম্যান্স করতে পারবে না। কিন্তু প্রত্যেকের সেই সামর্থ্য আছে। এই যে ইমার্জিং কাপ টা হলো কতগুলো ছেলেকে আপনারা দেখলেন। তাঁরা দারুণ এবং তরুণ ছেলেদের সুবিধা কি জানেন ওদের মাইন্ডসেট। তাই এভাবে তৈরি করা মানে এখন থেকে চেষ্টা করলেন দুই বছর পরে তৈরি করা সম্ভব।’
বোর্ড সভাপতি জানিয়েছেন এটা নিয়ে চিন্তা না করে নতুনদের জন্য বিশ্ব মানের ট্রেনিংয়ের ব্যাবস্থা করে আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চান তাঁরা। পাপন মনে করেন বেশি বেশি টেস্ট খেললে ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলেই টেস্টে ভালো করবে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দরকার বিশ্ব মানের ট্রেনিং সুবিধা, সেটা তো আমরা অবশ্যই দিব। তো আমি খুব একটা চিন্তিত না এই কোভিড পরিস্থিতিটা না থাকলে আমাদের পরিকল্পনা ছিল এই বছরের মধ্যেই যত পারি টেস্ট খেলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই কোভিডের কারণেই আমাদের একটা বছর হাতে চলে গেল। কোন খেলাধুলা নেই টেস্ট তো দূরে থাক। সে দিক দিয়ে আমার মনে হয় আমরা এক বছর পিছিয়ে গেছি কিন্তু এক বছর পরে দেখবেন আমরা টেস্ট ও বাংলাদেশ একটা ভাল কিছু করবে ইনশাল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাইপলাইনে যে খেলোয়াড় নাই এটা তো আর বলা যাবে না। কিন্তু আপনারা দেখেন এখন যে ইমার্জিং টিম তারপরে আরো যারা খেলছে দেখেন অনেক কিন্তু খেলোয়াড় আছে। পাইপলাইনের খেলোয়াড় আছে এটাতে কোন সমস্যা নেই । তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যাটা হলো একটা হচ্ছে আমরা আগে টেস্ট খেলতাম না এখন আমরা টেস্টে খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। দ্বিতীয়টা হচ্ছে আমার কাছে এই গত এক-দেড় বছরের আমার কাছে মনে হয়েছে একটা টিমের বিপক্ষে আমরা কোন ম্যাচ বা সিরিজ যখন আসতো এখন কার সাথে আগের কোনো মিল নেই। তারা তাদের পরিকল্পনার পরিবর্তন করেছে ভালো-খারাপ সেদিকে আমি যাচ্ছি না।’
আর এই নতুন দল সাজানোর জন্য মে-জুন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিসিবি। বিসিবি সভাপতি মনে করেন অনেকেই অনেক ফরম্যাট খেলতে চায়না। কারা কোন ফরম্যাট খেলতে চায়না তাই এটা নিশ্চিত হয়েই দল করতে চায় বিসিবি।
পাপন বলেন, ‘তো ওই পরিকল্পনা কাজে দিচ্ছে না। অন্তত এখন দিচ্ছে না দীর্ঘমেয়াদী কি হবে আমি জানিনা। এর সাথে সাথে আমার আরেকটা কথা হচ্ছে কেন জানি আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সত্যি না ভুল এটা আমি বলছি না অনেকে খেলতে চায় ও না । অনেকের অনেক ফরম্যাটে খেলার ইচ্ছা কম। বা কনফিডেন্স নেই বা ইচ্ছা নাই জানিনা। তাই আপনাদেরকে আমি যেটা বলেছি যে আমরা এই মে-জুন মাসের মধ্যেই যদি আমরা জেনে যাই কে কোন ফরমেটে ইচ্ছুক না তাহলে আমরা সে অনুযায়ী দল করতে পারবো।’