জৈব সুরক্ষা বলয় – কথাটা এই করোনা ভাইরাস মহামারীর যুগে বোধকরি কারোই অজানা নয়। এই বিশেষ ব্যবস্থাতেই এখন বিশ্বজুড়ে চলছে ক্রিকেটের বিভিন্ন আসর। তবে, পাকিস্তান সুপার লিগে এই বায়ো বাবল নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
আর এই ছেলেখেলার জের ধরে ক্রিকেটারদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে হয়েছে সমালোচনা। এই সমালোচনার মিছিলে এবার নাম লেখালেন পাকিস্তানের ঘরের ছেলে মোহাম্মদ আমির। তিনি পিএসএলে পাকিস্তানের কোভিড-১৯ প্রটোকলের তীব্র নিন্দা করেছেন।
এই বছর করাচিতে পিএসএলের ষষ্ঠ আসর বসেছিলো। কোভিড-১৯ এর কারণে এইবারে পিএসএলের ম্যাচগুলো পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। করাচিতে পিএসএল চলাকালীন সময়ে পিএসএলের খেলা চলাকালীন সময়ে ক্রিকেটারদের মধ্য কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে।
পিএসএল চলাকালীন সময়ে সাতজন ক্রিকেটার নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এর কারণে এই বছরের পিএসএল আসরের পরবর্তী অংশ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। পিসিবি পিএসএলের সকল ফ্রাঞ্চাইজির সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়। ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখে পিএসএল বন্ধ ঘোষণা করার আগে পিএসএলে মাত্র ১৪ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের কারণে পিএসএল পিছানো সিদ্ধান্ত নেয়ায় পিসিবিকে বেশ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ আমির পিসিবি করোনা প্রটোকল নিয়ে বেশ প্রশ্ন তুলেছেন। সাথে পিসিবির ব্যবস্থাপনা নিয়েও ক্রিকেট পাকিস্তানের সাথে কথা বলেছেন। আমির পিএসএলে খেলেছিলেন করাচি কিংসের হয়ে। ক্রিকেট পাকিস্তানের সাথে কথা বলার সময় তিনি জানান, যে হোটেলে পিএসএলে খেলা ক্রিকেটার এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ছিলো সেখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত ছিলো।
আমির বলেন, ‘হোটেলে দুইটা লিফট ছিলো। একটি লিফট ব্যবহার করতো ক্রিকেটার এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা। আর অন্যটি ব্যবহার করতো অন্যান্য অতিথিরা। দুটি লিফটকে একটি কাঠের টুকরো দিয়ে আলাদা করা হয়েছিলো। এই কাঠের টুকরার মধ্য দিয়ে অন্যান্য অতিথিরা সবার সাথে কথা বলতে পারতো এবং দেখতে পারতো। এটা দিয়ে তো আর কোভি ১৯ কে আটকােনো যায় না।’
তিনি দাবি করেন, টুর্নামেন্ট চলাকালে হোটেলে বাইরের অতিথি থাকার অনুমতি দেওয়াটাই কাল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে অন্যান্য অতিথিদের এই হোটেলে থাকার অনুমতি দেয়া উচিত হয়নি। আর পুরো টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে হোটেলে স্টাফদেরকেও জৈব সুরক্ষা বলয়ে রাখা উচিত ছিল।’
করোনা মহামারির মধ্য অন্য টুর্নামেন্ট খেলার অভিজ্ঞতাও জানান মোহাম্মদ আমির। করোনা মহামারীর মধ্যে আমির আবুধাবী টি-টেন লিগ এবং লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) খেলেছিলেন। এই দুই টুর্নামেন্টে ক্রিকেটাররা যে হোটেলে ছিলো সেখানে অন্য অতিথিদের থাকার অনুমতি ছিলো না।
এই সম্পর্কে মোহাম্মদ আমির বলেন, ‘লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ এবং টি-টেন লিগ চলাকালীন সময়ে হোটেল পুরোটাই ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ ছিলো। প্রত্যেক দলের জন্য আলাদা লিফট এবং দলগুলো নির্দিষ্ট ফ্লোরে আবদ্ধ ছিলো। এছাড়াও প্রত্যেক দলের জন্য ছিলো আলাদা জিম এবং পুল সেশন। এক দল জিম এবং পুল সেশন শেষ করার পর অন্য দলের সেখানে যেতে ২০ মিনিট দেরি করতে হত। এই সময়ের মধ্যে পুল এবং জিম পুরোপুরি স্যানিটাইজ করা হত।’
পিএসএলে বায়ো বাবল সঠিকভাবে না মানার পাশাপাশি আরো অনেক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স হেলস পিএসএলে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে, শোনা যাচ্ছে আবারো অনিয়ম মুছে শিগগিরই মাঠে গড়াবে পিএসএল।