বাজে আচরণের শীর্ষে বাংলাদেশ!

ক্রিকেট মাঠে আইসিসির আচরণবিধির প্রয়োগ বেশ কঠিন হবার পরও বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা নিয়মিতই আচরণ বিধি ভঙ্গ করে যাচ্ছেন। স্যান্ডপেপারগেট কেলেঙ্কারির পর থেকে এখন পর্যন্ত আইসিসির আচরণ বিধি ভাঙার তালিকায় সবার উপরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।

ক্রিকেট মাঠে সব ক্রিকেটাররা সবার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা রেখে খেলবেন এই আশা সবাই করে। কিন্তু এরপরেও ক্রিকেটাররা অনেক সময় মাঠে থাকা ম্যাচ অফিশিয়াল এবং ক্রিকেটারদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে। ক্রিকেট মাঠে ক্রিকেটারদের আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কিছু আচরণবিধি তৈরি করেছে। এই আচরণবিধি অনুযায়ী ক্রিকেটারদের মাঠের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

ক্রিকেট মাঠে আইসিসির আচরণবিধির প্রয়োগ বেশ কঠিন হবার পরও বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা নিয়মিতই আচরণ বিধি ভঙ্গ করে যাচ্ছেন। স্যান্ডপেপারগেট কেলেঙ্কারির পর থেকে এখন পর্যন্ত আইসিসির আচরণ বিধি ভাঙার তালিকায় সবার উপরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।

এখানে এখন প্রশ্ন আসতেই পারে স্যান্ডপেপারগেট কেলেঙ্কারী কী? স্যান্ডপেপারগেট কেলেঙ্কারী হলো ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া দলের তিন ক্রিকেটার বল টেম্পারিং এর ঘটনা। এই ঘটনার শাস্তির পর থেকে বিভিন্ন দেশ আচরণ বিধি ভাঙ্গার দিক থেকে বেশ সচেতন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা আচরণ বিধি ভাঙ্গার দিক থেকে বেশ এগিয়ে আছেন।

  • বাংলাদেশ

আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাতের দিকে সবার উপরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত নয় বার আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। আর বাংলাদেশের পকেটে যোগ হয়েছে মোট ৯ ডিমেরিট পয়েন্ট। এখন পর্যন্ত ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্ট ভাঙ্গার অনুপাত ০.১২২।

  • ইংল্যান্ড

বাংলাদেশের পরের অবস্থানেই আছে ইংল্যান্ড। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১২ বার আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে তাদের ক্রিকেটাররা। আর তদের পকেটে যোগ হয়েছে  ১৩ ডিমেরিট পয়েন্ট। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত ০.১০৯ এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্ট ০.১১৮।

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এই দেশের ক্রিকেটাররা আচরণ বিধি ভাঙ্গার তালিকায় আছেন তিন নম্বরে। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত ৮ বার আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। এখন পর্যন্ত ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা ১৬ ডিমেরিট পয়েন্ট তাদের পকেটে যোগ করেছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত ০.০৭৩ এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়ার পরিমান ০.১৪৭।

  • শ্রীলংকা

শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা বল টেম্পারিং কান্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪ বার ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। এই সময়ের মধ্যে শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা পেয়েছেন সর্বোচ্চ ২৪ ডিমেরিট পয়েন্ট।

শ্রীলংকান ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত ০.০৪৭ এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্টের অনুপাত ০.২৮২।

  • ভারত

সান্ডাপারগেট কেলেঙ্কারির পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটাররা বেশ সতর্ক হয়ে গিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তারা মোট ৫ বার ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছিলেন। এছাড়াও এখন পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটাররা মোট ৫ ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছে।

ভারতীয় ক্রিকেটাররা ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে ০.০৪২ বার এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছে ০.০৪২ করে।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা

২০১৮ সালের পর থেকে প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত ৩ বার ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। আর এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পকেটে যোগ হয়েছে ৩ ডিমেরিট পয়েন্ট।

প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গা এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্টের অনুপাত ০.০৩৮।

  • নিউজিল্যান্ড

দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের এই সময়ের মধ্যে আচরণ বিধি ভাঙ্গা এবং ডিমেরিট পয়েন্ট সমান।
এমনকি নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্টের অনুপাতও একই।

  • আফগানিস্তান

আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা ২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ বার ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। আর এই সময়ের মধ্যে আফগানিস্তানের পকেটে যোগ হয়েছে মাত্র ২ ডিমেরিট পয়েন্ট।

ম্যাচ প্রতি আফগানিস্তানের আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত ০.০৩৬ এবং ম্যাচ প্রতি ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়ার অনুপাত ০.০৩৬।

  • আয়ারল্যান্ড

আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটাররা এখন পর্যন্ত ২ বার আচরণ বধি ভেঙ্গেছে। আর তাদের পকেটে যোগ হয়েছে মাত্র ২ ডিমেরিট পয়েন্ট।

ম্যাচ প্রতি আয়ারল্যান্ডের আচরণ বিধি ভাঙ্গা এবং ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়ার অনুপাত ০.০২৯।

  • অস্ট্রেলিয়া

বল টেম্পারিং কান্ডে নিষিদ্ধ হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়ার তিন ক্রিকেটার। এই ঘটনার পর থেকে আচরণ বিধির দিক দিয়ে বেশ কঠোর অবস্থানে আছে।

বল টেম্পারিং কান্ডের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে ২ বার। আর তাদের পকেটে যোগ হয়েছে মাত্র ২ ডিমেরিট পয়েন্ট। ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গা এবং ডিমেরিট পয়েন্ট পাওয়ার অনুপাত হলো ০.০১৯।

  • পাকিস্তান

পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা আচরণ বিধি ভাঙ্গার দিক থেকে সব সময় বেশ এগিয়ে থাকে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে ২০১৮ সালের পর থেকে আচরণ বিধি ভাঙ্গার দিক থেকে বেশ পিছিয়ে আছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা।

এই সময়ের মধ্যে মাত্র ২ বার ম্যাচে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। আর এই সময়ের মধ্যে তাদের পকেটে যোগ হয়েছে মাত্র ২ ডিমেরিট পয়েন্ট।

পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ম্যাচ প্রতি আচরণ বিধি ভাঙ্গা এবং ডিমেরিট পয়েন্ট পাবার অনুপাত ০.০১৯।

  • জিম্বাবুয়ে

আচরণ বিধি ভাঙ্গার তালিকায় সবচেয়ে নিচের অবস্থানে আছে জিম্বাবুয়ে। ২০১৮ সালের পর থেকে মাত্র ১ বার মাঠে আচরণ বিধি ভেঙ্গেছে। আর তাদের পকেটে যোগ হয়েছে মাত্র ১ ডিমেরিট পয়েন্ট।

ম্যাচ প্রতি ডিমেরট পয়েন্ট এবং আচরণ বিধি ভাঙ্গার অনুপাত মাত্র ০.০১৮।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...