ব্যর্থ মঞ্চের শক্ত বীর

সেঞ্চুরি করার পর কেই বা চায় তার দল হারুক! সবাই চায় নিজের সেরা ইনিংসের দিনে দলকে জেতাতে। তবে সবাই তো ব্যক্তিগত সাফল্যর সাথে দলীয় সাফল্যটা একসাথে পায় না।

তেমনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) এমন কিছু ইনিংসের দেখা মিলেছে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন, সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছেছেন – কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি তারা। এমনই সেরা পাঁচটি সেঞ্চুরি নিয়ে এবারের আয়োজন।

  • ঋষাভ পান্ত (দিল্লী ক্যাপিটালস), প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ

২০১৮ সালে হায়দরাবাদের বিপক্ষে দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন ঋষাভ পান্ত। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সেই ম্যাচটি হেরে যায় দিল্লী। প্রথমে ব্যাট করে পান্তের করা ৬৩ বলে ১২৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বেশ ভালো সংগ্রহ পায় দিল্লী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সেই ম্যাচে জয় পায় হায়দ্রাবাদ।

ঋষাভের সেই ইনিংসের ঝলকে ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। সেই ইনিংসের পর তাঁকে নতুন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি নামও দেওয়া হয়েছিলো। পান্তের সেই ইনিংসটি টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ড হিসেবে আছে। তবে তার আক্ষেপ! দূর্দান্ত সেই সেঞ্চুরির দিনে তার দল ম্যাচে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

  • অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস (ডেকান চার্জার্স), প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালস

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) প্রথম আসরে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস রাজস্থান
রয়্যালসের বিপক্ষে অনবদ্য একটি সেঞ্চুরি করেন। আইপিএল ইতিহাসের প্রথমবারের মত সেই সেঞ্চুরিটাই জয়ের দেখা পায়নি। সাইমন্ডসের সেঞ্চুরির পরেও ডেকান চার্জার্স সেই ম্যাচটি হেরে যায়।

২০০৯ সালের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া ডেকান চার্জার্সের হয়ে সাইমন্ডস সেদিন ৫৩ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেন। ডেকান ২১৫ রানের বিশাল টার্গেট দাঁড় করায়। কিন্তু গ্রায়েম স্মিথ ও ইউসুফ পাঠানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সেই ম্যাচে জয় পায় রাজস্থান রয়্যালস।

  • ঋদ্ধিমান সাহা (কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব), প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স:

২০১৪ সালের আইপিএলে ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ফাইনালে পাঞ্জাবের হয়ে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দলকে ট্রফির ছোঁয়া দিতে চেয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁর করা ৫৫ বলে ১১৫ রানের ঝড়ো সেই ইনিংসে ২০ ওভারে ১৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। ফাইনালের চাপ, বড় সংগ্রহ সব মিলিয়ে বেশ ভালো অবস্থানেই ছিলো পাঞ্জাব।

কিন্তু, জবাবে ব্যাট করতে নেমে মানিশ পান্ডের তাণ্ডবে সেই ম্যাচে হেরে যায় পাঞ্জাব। শিরোপা ঘরে তুলে কলকাতা নাইট রাইডার্স। মানিষ পান্ডের ইনিংসের কাছে হার মেনে যায় সাহার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। ম্যাচ হারলেও সেটা খোদ আইপিলের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা সেঞ্চুরি।

  • হাশিম আমলা (কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব), প্রতিপক্ষ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

২০১৭ সালে ইন্দোরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে হাশিম আমলা অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করেও ম্যাচ হারে তাঁর দল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। দক্ষিণ আফ্রিকান এই কিংবদন্তি ৬০ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ১০৪ রানের ঝড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে জস বাটলার ও নিতিশ রানার ব্যাটিং তান্ডবে তাদের জোড়া ফিফটিতে ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। হাশিম আমলার দূর্দান্ত সেঞ্চুরির পরেও পাঞ্জাবের বোলিং ব্যর্থতায় তার সেঞ্চুরি পুরোটাই ভেস্তে যায়। নিতিশ রানা ও বাটলারের ব্যাটে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাঞ্জাব।

  • সাঞ্জু স্যামসন (রাজস্থান রয়্যালস), পাঞ্জাব কিংসঃ

২০২১ সালে আসরের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ব্যাটিং ঝড় তুলেন রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন। দূর্দান্ত ব্যাটিং করে তুলে নেন অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই পান সেঞ্চুরি। তার রেকর্ডের দিনে ৪ রানে ম্যাচটি হারে রাজস্থান।

৬৩ বলে ৭ ছক্কা ও ১২ চারে ১১৯ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেন সাঞ্জু স্যামসন। ইনিংসের শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিলো ৫ রান! কিন্তু বাউন্ডারির কাছাকাছি জায়গায় ক্যাচ আউট হন স্যামসন। ৪ রানের আক্ষেপের হারে ভেস্তে যায় তাঁর ঝড়ো সেঞ্চুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link