ব্যাটিং পিচ, আইপিএলে ২৫০ রান হয়েছিল সহজেই, বাংলাদেশের বোলাররা ফর্মে নেই – সব জেনেশুনেই খেলা দেখতে বসেছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু চোখ খুলে আসার জোগাড়, সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেটাঙ্গনে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প আগে আসেনি। হুড়মুড় করে কেবল ভেঙ্গেই পড়েনি টাইগাররা, একেবারে মাটির সাথে মিশে গিয়েছে বোধহয়।
এই অলৌকিক কারবারের কান্ডারি ভিনগ্রহের কেউ নন, পাশের দেশেরই রক্তে মাংসে গড়া দুই ব্যাটার – সাঞ্জু স্যামসন আর সুরিয়াকুমার যাদব। তাঁদের রুদ্রমূর্তির সামনে পৌরাণিক কোন বীর আসলেও বোধহয় দাঁড়াতে পারতেন না। লাল রং দেখলে ষাঁড় যেমন হিংস্র আর বন্য হয়ে উঠে তাঁরাও হয়তো বাংলাদেশের জার্সিতে লালের আধিক্য দেখে হিংস্রতার শিখরে আরোহণ করেছেন।
অভিষেক শর্মাকে যখন আউট করেন তানজিম সাকিব, তখনো শান্ত বাহিনী বুঝতে পারেনি কি বিপদ তাঁরা ডেকে এনেছে। শুরুটা করেছিলেন অধিনায়ক সুরিয়া, মাথার ওপর দিয়ে সাকিবকে মেরেছিলেন ছক্কা। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি; পিছনে ফিরবেন কি, বাউন্ডারি মারতে মারতে তো শ্বাস নেয়ার কথাই হয়তো ভুলে গিয়েছেন তাঁরা।
দুই ডানহাতি পাওয়ার প্লে-তেই আদায় করেন ৮২ রান, ভারতের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ! কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডারের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তান্ডবের মাত্রাও বাড়ে অতিমানবীয় গতিতে। ৭.১ ওভারে দলীয় শত রান পূর্ণ কিংবা রিশাদ হোসেনের এক ওভারে ৩০ রান তোলা সবই ঝড় তুলেছে রেকর্ড বইয়ে। এমনকি দশ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৫২ রান, সেটাও তাঁদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
‘ডাবল এস’-এ ভর করে টিম ইন্ডিয়া ছুটেছে আলোর বেগে। স্যামসন যখন আউট হন তখন ভাঙ্গে ১৭২ রানের জুটি, টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মাঝে এটি অষ্টম সর্বোচ্চ রানের জুটি। তবে স্কোরিং রেটের দিক দিয়ে তাঁরা নিঃসন্দেহে পিছনে ফেলেছে সবাইকে।
সঞ্জু-সুরিয়া যে নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে বাংলাদেশের ওপর সেটা ইতিহাস কিংবা পরিসংখ্যান পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে পারবে না। তবে যতবারই ভারতের মুখোমুখি হবে টাইগাররা ততবারই দুঃস্বপ্নের মত হাজির হবেন দু’জনেই, দুঃস্বপ্ন হয়ে আসবে রাজীব গান্ধী স্টেডিয়াম।