বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে জাতীয় দলের সতীর্থ ভিনিসিয়াস জুনিয়রের হ্যাটট্রিক খবরের কাগজে দেখে বোধহয় মেনে নিতে পারেননি রাফিনহা। তাই তিনিও একইভাবে জ্বলে উঠলেন, ঠিক একই ভঙ্গিতে ছিঁড়েখুঁড়ে খেলেন আরেক জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখকে। যে বায়ার্নকে নিয়ে এত ভয় বার্সেলোনার তাঁদের পাড়ার ক্লাব বানিয়ে ছেড়েছেন তিনি।
কাকতালীয় বটে, বাভারিয়ানদের বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল ব্লাউগানা জার্সিতে সাম্বা বয়ের শততম ম্যাচ। সেজন্যই রঙিন মুহুর্ত আরো রঙিন করে রাখতে চেষ্টার কোন কমতি রাখেননি তিনি। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে স্রেফ নাচিয়ে ছেড়েছেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পেয়েছেন নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক।
রাফিনহা, আগের মৌসুমে স্রেফ একটা নামই ছিল। অথচ নতুন মৌসুমে তিনি বদলে গেলেন বসন্তের নতুন পাতার মতই; কাতালান ক্লাবটার সাফল্যের সব দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছেন। অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পাওয়ার পর আরো তীক্ষ্ণ আর ক্ষুরধার হয়েছেন বটে। তাঁর রুদ্রমূর্তির প্রতিফলন দেখা গেল বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে।
এই উইঙ্গারের শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মত, কিংবা স্বপ্নের চেয়ে উড়ন্ত। ম্যাচের সময় এক মিনিট পার হওয়ার আগেই উদযাপনের সুযোগ পেয়ে যান তিনি, ম্যানুয়েল নয়্যারকে যেভাবে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে বাধ্য করেছেন সেটা দেখে নিশ্চয়ই পৈশাচিক আনন্দ পেয়েছে সমর্থকেরা। এরপরের বাকিটা সময় তাঁর দুই পায়ে স্রেফ আলোর ঝলকানি দেখা গিয়েছে।
বিরতির ঠিক আগে মার্ক ক্যাসাদোর দারুণ একটা লফটেড পাস আরও দারুণ ভঙ্গিতে রিসিভ করেন এই তারকা। এরপর গতি আর স্কিলের মিশেলে ঢুকে পড়েন ডি বক্সে; অতঃপর বাম পায়ের শট এবং গোল। ৫৬ মিনিটের সময় আসে আরাধ্য মুহুর্ত, দ্বিতীয় গোলের মত প্রায় একই ভঙ্গিমায় তিনি আদায় করেন তৃতীয় গোল! ততক্ষণে বড় জয় মুঠো-বন্দি হয় বার্সেলোনার।
বায়ার্ন মিউনিখকে নিয়ে কত শঙ্কা, কত ভয় – সব কালো মেঘ উড়ে পালিয়ে গেল রাফিনহার এক ঝড়ে। এল ক্ল্যাসিকোতেও নির্ঘাত এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি দেখার অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে কিউলরা। আর পুরো বিশ্ব ক্ষণ গুনছে ভিনি বনাম রাফিনহা ব্যাটেল দেখার।