দিনশেষে তাইজুল ইসলামের নামের পাশে ফাইফার। খুশিও হবেন হয়ত কেউ কেউ। বাংলাদেশের একমাত্র বোলার, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারকে গুড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা একটু ভিন্ন। উইকেট তিনি পেয়েছেন বটে। তবে, উইকেট প্রাপ্তিতে তাঁর কৃতিত্ব সামান্যই।
তাইজুল কখনোই বলকে খুব বেশি টার্ন করাতে পারেননি তাঁর ক্যারিয়ারে। তিনি মূলত চ্যানেল বোলার। একটা নির্দিষ্ট লাইন ধরে ক্রমাগত বোলিং করে যেতে পারেন তিনি। উইকেট সহয়তা করলে বলে ঘূর্ণির দেখা পান বর্ষীয়ান এই ক্রিকেটার। তবুও সাদা পোশাকে বেশ সফল এই বোলার। কিভাবে তিনি সফল, সেটার একটা উদাহরণ হতে পারে চট্টগ্রাম টেস্ট।
প্রথম দিনে ৩০৭ স্কোরবোর্ডে জমা করে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দিনে তাই তাদের পরিকল্পনা ছিল স্পষ্ট। যতদ্রুত সম্ভব নিজেদের রান বাড়িয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাওয়া। সে পরিকল্পনা থেকে, তারা খানিক আগ্রাসী মনোভাবে ব্যাট চালিয়েছেন। যেহেতু উইকেট চ্যানেলে বল করেন তাইজুল, সেহেতু শট মিস হলেই উইকেট প্রাপ্তির সুযোগ বেড়ে যায়।
তাইজুলের পাওয়া অধিকাংশ উইকেটের দিকে একটু নজর দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এইডেন মার্করামও প্রথম দিন তার বলে শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। ডেভিড বেডিংহামও মারমুখী ভঙ্গিমায় ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ছক্কা হাঁকানোর পরবর্তী বলে উইকেট তুলে নিয়েছেন তাইজুল।
যদিও প্রশ্ন তুলতেই পারেন ব্যাটার মারকুটে হয়েছে, বোলার কিছুই করেননি? এ কথা সত্য যে তাইজুল বোলিং করেছেন। পরিকল্পনার বালাই ছিল না সেখানটায়। ব্যাটারকে ফাঁদেও ফেলতে পারেননি। বরং প্রোটিয়ারা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে, উইকেট হারিয়েছেন।
তাইজুল নিঃসন্দেহে ভাল বোলার। তিনি উইকেট পান প্রায় প্রতি ম্যাচেই। কিন্তু দল যখন বিপদে থাকে, তখন তিনি ব্রেকথ্রু এনে দিতে ব্যর্থ হন। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথমদিনে ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন টনি ডে জর্জি ও স্ট্রিস্টান স্টাবস। স্টাবসের উইকেট তাইজুলের পকেটে গিয়েছে বটে। কিন্তু উইকেট চ্যানেলে করা বলটায়, মনোযোগের অভাবে স্টাবস বোল্ড হয়েছেন।
সমস্যাটা এখানেই, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিপক্ষ ভুল না করছে, ততক্ষণ অবধি তাইজুল উইকেট তুলে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিজস্ব কোন কারসাজিতে উইকেট পাওয়া হয়ে ওঠেনি তাইজুলের। এ বিষয়ই বাংলাদেশকে ভোগায় অধিকাংশ ম্যাচে। প্রশংসার বদলে তাই প্রশ্ন ওঠে।