রেফারির শেষ বাঁশি বেজে উঠবে এখনই, দর্শকদের কান তখন সেদিকেই। ঠিক সে সময় ঘটলো অঘটন, স্রেফ পাঁচ মিনিট আগে মাঠে নামা জানদে সিলভা আঘাত হানেন ইন্টার মিয়ামির দূর্গে। চোখের পলকে সৃষ্টি হয় দুইটা ভিন্ন চিত্রের; একদিকে মিয়ামি সমর্থকদের চেহারায় ফুটে উঠে বেদনার্ত হৃদয়, অন্যদিকে আটলান্টা ইউনাইটেড শিবিরে শুরু হয় বাঁধন হারা উল্লাস।
জিতলেই সেমিফাইনাল, এমনকি ড্র করলেও চলবে – এমন সমীকরণ সামনে রেখে আটলান্টার উঠোনে খেলতে নেমেছিল মিয়ামি। তবে সিলভার শেষ মুহূর্তেের গোলে হেরে বসলো তাঁরা, স্রেফ কিছু সেকেন্ডের ব্যবধানে অপেক্ষা বাড়লো আরো এক ম্যাচের।
লিওনেল মেসি মাঠেই ছিলেন, ফুটবল জাদুকর তখন মঞ্চেই ছিলেন। তবু রক্ষা পায়নি মিয়ামি, তবু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি – উল্টো সব আনন্দ রূপ নিয়েছে বিষাদে।
নিবেই না কেন, দলটার ফরোয়ার্ড লাইন যে পারফরম্যান্সের প্রদর্শনী দেখিয়েছে তাতে হতাশ হবে যে কেউ। মেসি নিজেই ৮৩ মিনিটের সময় হাতছাড়া করেছিলেন গোলের সুযোগ, বাকিরাও বারবার ব্যর্থ হয়েছেন ফিনিশিং টাচ দিতে। তবে আর্জেন্টাইন তারকা চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত খেলে তিনি সফল পাস দিয়েছেন পঞ্চাশটা, এর মধ্যে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে খেলেছেন এগারোটা পাস।
তাঁর পায়ের জাদুতে সৃষ্টি হয়েছে পাঁচ পাঁচটা গোলের সুযোগ, এত সুযোগ আর কেউই তৈরি করতে পারেনি। যদিও তাতে লাভ হয়নি আদৌ। লুইস সুয়ারেজ নিজেও পারেননি গোল এনে দিতে।
অবশ্য শুরুর গল্পটা ভালোই ছিল; বিরতির আগে ব্র্যাড গুজান ক্লিয়ার করতে গিয়ে হোঁচট খেলে বল পেয়ে যান তাঁর পিছনে থাকা ফেদেরিকো রেদোনদো। তিনি আবার সেই বল বাড়িয়ে দেন হেক্টর মার্টিনেজের দিকে, ঠান্ডা মাথায় চিপ শটে জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে এরপর আর ভুল হয়নি তাঁর। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ডেভিড বেকহামের দল।
তবে ৫৮ মিনিটের সময় ডেররিক উইলিয়ামস সমতায় ফেরান আটলান্টাকে, পরের গল্প তো জানাই আছে সবার। দারুণ একটা প্রত্যাবর্তনের কাব্য লেখা হয়েছে মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে।
যদিও সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি, দুই দলই একটি করে ম্যাচ জেতায় প্লে অফের ভাগ্য গড়িয়েছে তৃতীয় ম্যাচে। অর্থাৎ পরবর্তী ম্যাচে যারা জিতবে তাঁদের হাতেই উঠবে সেমি ফাইনালের টিকিট।