ব্রিটিশ কিংবা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের জন্য উপমহাদেশীয় কন্ডিশনটা একই কঠিনই বটে। আবার কেউ কেই নিরাপত্তা ইস্যু-সহ নানা অজুহাতে এসব জায়গায় আসতে চান না। তবে, মঈন আলী সেখানে কিছুটা ব্যতিক্রম।
বিশেষ করে স্পিনিং অলরাউন্ডার বলে তাঁর আলাদা কদরও আছে। ইংল্যান্ডের দলের হয়ে তো আসেনই, বাদ যায় না পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) কিংবা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগও (আইপিএল)। আর বাংলাদেশ হলে তো কথাই নেই, স্ত্রী-সন্তান নিয়েই চলে আসেন তিনি।
আসবেন নাই বা কেন, এই বাংলাদেশই যে মঈন আলীর শ্বশুরবাড়ি। হ্যাঁ, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, ইংল্যান্ডের দুনিয়া কাঁপানো এই অলরাউন্ডার আসলে বাংলাদেশের জামাই। তাও আবার যেন তেন প্রকারে জামাই নয়। প্রবাসী কোনো বাংলাদেশীকে বিয়ে করেননি। রীতিমতো বাংলাদেশে এসে প্রেম করেন, সিনেমার মতো করে পারিবারিক প্রতিকূলতা দূর করে তবে এখান থেকে নিয়ে গেছেন স্ত্রীকে।
মজার ব্যাপার হলো, সেই স্ত্রীর আগ্রহেই ২০১৬ সালে যখন নিরাপত্তার ইস্যুতে বাংলাদেশে অনেক ইংলিশ তারকাই আসতে অনিচ্ছুক ছিলেন তখন ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার আগে মঈনই বাংলাদেশ সফরে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
মঈন আলী ও তার স্ত্রীর পরিবার অবশ্য কখনোই বিষয়টা নিয়ে খোলাসা করেননি। তবে, জানা গেছে তাঁর স্ত্রীর নাম ফিরোজা হোসেন, ফিরোজার জন্ম বাংলাদেশেই।
২০০৫ সালে মঈন আলীর সাথে পরিচয় তার স্ত্রীর। সে বছর এক ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন মঈন। পরিচয় হয় সিলেটের এক মেয়ের সাথে। সেখান থেকে সম্পর্ক। ২১ বছর বয়সে সেই মেয়ের সাথেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মঈন।
শুরুতে বাংলাদেশের এই পরিবারটি কিছুতেই এরকম অপরিচিত এক বিদেশীর সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে চাচ্ছিলেন না। জানা গেলো, যে বাংলাদেশ জাতীয় দলে মঈন আলীর এক বন্ধু ক্রিকেটার তখন কিছুটা দূতিয়ালিও করেছেন! পরে মঈনের পরিবারের আগ্রহে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা ইংল্যান্ডে গিয়ে দেখেশুনে তবে রাজী হয়েছেন। পরিবারের সম্মতিতেই দু’জনের বিয়ে হয়েছে।
এরপর হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। পরিবার-পরিজন নিয়ে মিডিয়ার সামনে মঈন আলী তেমন আসেন না। তবে একবার মাঠে দেখা গেছে তার ছেলে আবু বকরকে।
পরিবার নিয়ে ইংল্যান্ডেই থাকেন মঈন আলী। ফিরোজার পরিবারও থাকে ইংল্যান্ডেই। মঈনের সাথে ফিরোজা বাংলাদেশে আসলেও সেবার সিলেটে যাওয়া হয়নি।