ব্যাট হাতে টানা ব্যর্থতার পর আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে নিজের রান খরা কাটিয়েছেন লিটন দাস। অথচ আট ইনিংস আগেই এই জিম্বাবুয়ের সাথেই দেশের মাটিতে তিন ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি করেছিলেন এই ওপেনার। এরপরই ছন্দ পতন হয় তাঁর। লিটন জানিয়েছেন করোনার কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই মোমেন্টাম হারিয়ে ছিলেন তিনি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন পরিবার ও স্ত্রীর প্রতি – তাঁদের জন্যই তিনি আবারো নিজেকে ফিরে পেয়েছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১২৬ রান করার পর তৃতীয় ওয়ানডেতে ১৭৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান; যেটি বাংলাদেশের হয়েও সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এরপর থেকেই নিজকে হারিয়ে খুঁজছিলেন লিটন। করোনা পরবর্তী সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ব্যর্থ হওয়ার পর এই ওপেনার ব্যর্থ ছিলেন নিউজিল্যান্ড সিরিজেও।
এরপর শ্রীলঙ্কার সাথে দেশের মাটিতে প্রথম দুই ম্যাচেও রানে ফিরতে পারেননি তিনি। তৃতীয় ম্যাচে জায়গা হারিয়েছিলেন একাদশে। চোটের কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটে লিগে খেলতে পারেননি শুরু থেকে। সুপার লগ দিয়ে ফিরে এক ম্যাচে রান পেলেও ব্যর্থ ছিলেন বাকি চার ম্যাচে। এমনকি এই ওপেনার রান করতে পারেননি এই সিরিজের প্রস্তুতি ম্যাচেও।
এরপরেও লিটন দাসেই আস্থা রেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। আস্থার প্রতিদান দিয়ে ১১৪ বলে ১০২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি। ম্যাচ শেষে লিটন ধন্যবাদ জানিয়েছেন সতীর্থ ও নিজের পরিবারের প্রতি। তিনি মনে করেন তারা সাহস দিত বলেই সফল হয়েছেন তিনি।
লিটন বলেন, ‘শেষ কয়েকটা ম্যাচে রান করতে পারিনি। আমি তো যখনই খেলি চিন্তা করি রান করবো। শুধু আমি না সব ব্যাটসম্যানই এরকম ভাবে চিন্তা করে। করোনার আগে আমি একটা ভালো মোমেন্টাম পেয়েছিলাম। ঐ সময় যদি করোনা না এসে নরমাল খেলা হতো তাহলে সুযোগ ছিল ভালো পারফরম্যান্স করার। আমার পিক টাইম ছিল তখন।’
এই ওপেনার আরো বলেন, ‘করোনার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাটা কঠিন হয়ে গেছে। মাথায় চিন্তা ছিল রান করতে হবে। এভাবে দেখতে দেখতেই আটটা ইনিংস গেছে। চেষ্টা করছি ভালো কিছু করার। দলের জন্য কন্ট্রিবিউট করার। সতীর্থদের হেল্প ছিল, পরিবারের হেল্প ছিল, বিশেষ করে আমার স্ত্রী বিশ্বাস করতো আমার দ্বারা অনেক কিছু সম্ভব। আমি করতে পারি। এই বিশ্বাস গুলোই আমাকে সাহায্য করেছে।’
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তামিম ইকবাল ফিরে যাওয়ার পর ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে না পেরে ফিরে যান সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিথুন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তখন বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশের ভরসা হয়ে উইকেটে ছিলেন লিটন। লিটন জানিয়েছেন প্রথম দিকে ব্যাট করা সহজ ছিল না। তাই সময় নিয়ে নিজের স্বাভাবিক খেলার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজকের উইকেটটা ব্যাটিং করার জন্য সহজ ছিল না। বিশেষ করে প্রথম বিশ ওভার। আবহাওয়াও আমাদের পক্ষে ছিল না। ওদের বোলাররা দারুণ বল করেছে। উইকেট পড়তে ছিল। আমি এমনিতেই ম্যাচের আগে চাপে ছিলামই রান করতে হবে। উইকেট পড়া দেখে ভেবেছি দলকে বড় জায়গাতে নিয়ে যেতে হবে। সব কিছু মিলিয়ে আমি ম্যানেজ করেছি। কিছু চিন্তাধারা কাজ করেছে। চেষ্টা করেছি নরমল ব্যাটিং করতে।’
জানিয়ে রাখা ভালো, সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে আগামী ১৬ জুলাই দ্বিতীয় ও ২০ জুলাই তৃতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।